পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম সংখ্যা । ] • বারাণসী-অভিমুখে। d eవ •একটা শাদা মাৰ্ব্বেলের আসনপীঠ ;–ইহ ছাড়া আর কিছুই নাই । ( মনে হয়, সেকালে রাজদরবারের এতটা গাম্ভীৰ্য্য ছিল যে, লোকের চিত্তভার লাঘব করিবার জন্ত বিদুষকের অধিষ্ঠান আবখ্যক হইত। সকলেই জানে, আজকালকার রাষ্ট্রীয় মহাসভায় এই কাজের জন্ত কোন বিশেষ লোকের প্রয়োজন হয় না । ) বাদশার স্নানাগার শুভ্ৰ—বলা বাহুল্য, একেবারে তুষারগুদু ; আর তাহাতে কত •জটিল রেখাবিদ্যাস, কত ছোট-ছোট পিলান পরম্পরের মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট, সহস্র ভাজবিশিষ্ট কত ছুচাল খিলান, খুদিয়া বাহির-কর বহু ঘর-কাটা শব্দযোনি কত পিলানম ধূপ, তাহার আর সংখ্যা নাই ; মার্নেল দেয়ালের উপর এক একটা ফুলের ডাল ইতস্তত বিক্ষিপ্ত 'নিৰ্ম্মাণ করিতে সব প্রস্তরফলকে এত স্বক্ষ ছিদ্র কাটা যে, দুর হইতে মনে হয়, যেন সরু সরু সুন্দর থামের মধ্যে শাদা জরির জাল টানা রহিয়াছে। কিন্তু এই সব কারুকার্য্য-যাহ সম্বুসা ভঙ্গুর ও ক্ষণস্থায়ী বলিয়া মনে হয়—আসলে উহা খুবই পাকাপোক্ত ; একটা মানুষ বিপুল অর্থক্ষয় করিয়া কত স্থায়ী ও সুন্দর জিনিষ সমর্থ-ইহাই তাহার একটি জলন্ত দৃষ্টান্ত । এই বিরাষ্ট্র বাসগৃহের নিম্নস্থ গাথুনিসমূহের মধ্যে, যে নৈসর্গিক শৈলের উপর ইহা স্থাপিত সেই শৈলের মধ্যে, আরো কত দালান সুকৌশলে সন্নিবেশিত, আরো কত অৰ্দ্ধচ্ছায়াচ্ছন্ন স্থান অধিষ্ঠিত, যাহার বিরাট মহিমার মধ্যে কি-জলি কেমন-একটা গুপ্তভাবের আভাস পাওয় যায়। তন্মধ্যে, প্রধান সুলতানার —যাহার এক-একটি টুকরাই পরমাশ্চর্ঘ্য ; স্নানাগারের মধ্যে প্রবেশ করিলে কেমন —উহা স্বর্ণ ও laps-মণি দিয়া উৎকীর্ণ । যে সমস্ত প্রাকার এই অট্টালিকাকে ধারণ করিয়া রহিয়াছে—সেই প্রাকারাবলীর শেষ প্রান্তভাগে, জুম্মামসজিদের পাশে–খোলা ময়দানের পাশে, কত ছোট-ছোট হাওয়াথানা, লঘু-গঠনের ছোট-ছোট কত চতুষ্কমণ্ডপ ; সেখান হইতে সমুস্ত সহর দৃষ্টিগোচর হয় ; এই সমস্ত গৃহ মুলতানাদিগের জন্ত, অন্দরমহলের সমস্ত বেগমদের জন্ত নিদিষ্ট ছিল । প্রাসাদের এই অঞ্চলেই, মাৰ্ব্বেলের জালিকাজের, জাফ্রি-কাজের বাহার খুলিয়াছে। দেয়ালের সর্বাংশের মধ্য দিয়াই তুমি দেখিতে পাইবে, কিন্তু তোমাকে কেহই দেখিতে পাইবে না। এই দেয়ালগুলা আপাদমস্তক ধৈ সব অখণ্ড প্রস্তরফলকে নিৰ্ম্মিত, সেই একটা মুড়ঙ্গ-সুলভ শৈ গ্য অনুভব করা যায় ; সেখানে আলোকের একটু ক্ষীণ রশিমাত্র প্রবেশ করে ; ইহা যেন জাদুকরের একপ্রকার মন্ত্রপূত গুহাবিশেষ, উহার খিলানমণ্ডপের কাজ দেখিলে মনে ছুয়, ঠিকৃ যেন বৃষ্টিধারা ঠাণ্ডায় জমিয়া গিয়াছে ; উহার দেয়ালগুলা অতিস্থম্বা দুপগ্নকাচে খচিত ; আদ্র তা ও যবক্ষরের প্রভাবে এই সহস্ৰ সহস্ৰ ক্ষুদ্র কাচখণ্ডগুলির "জলুস কমিয়া গিয়াছে ; চুম্কি-বন্ধানে • কোন পুরাতন জরির কাপড়ুের মত ‘ম্যাড় মেড়ে • হইয়া পড়িয়াছে । পূৰ্ব্বকালে, ভুরতের রূপযৌৱনসম্পন্ন সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরীরাই এই অবরোধের মধ্যে’ বাস করিত ; এবং এই সকল সন" এই