একাদশ সংখ্যা । ] সাহিতfসম্মিলন । ¢Š ፃ নিশ্চিতরূপে জানিতেছিলেন। কিন্তু এখনো আমাদের গৰ্ব্ব করিবার দিন আসে নাই, চেষ্টা করিবার দিন দেখা দিয়াছে মাত্র। যে সকল কাজ প্রতিদিন করিবার, এবং প্রতিমুহূর্তে বাহির হইতে যাহার পুরস্কার পাইবার নহে ; যাহার প্রধান বাধা বাহিরের প্রতিকূলতা নহে, আমাদেরই জড়ত, দেশের প্রতি আমাদেরই আন্তরিক ঔদাসীন্ত-সেই সকল কাজেই আশাপথে নুতনপ্রবৃত্ত তরুণ জীবনগুলিকে উৎসর্গ করিতে হইবে। সেইজন্য বিশেষ করিয়া আজ ছাত্রদের দিকে চাহিতেছি। এ সভায় ছাত্রসম্প্রদায়ের যাহারা উপস্থিত আছেন, আমি তাহাদিগকে বলিতে পারি, প্রৌঢ়বয়সের শিখরদেশে আরোহণ করিয়াও আমি ছাত্রগণকে মুদুর প্রবীণত্বের চক্ষে একদিনও ছোট করিয়া দেখি নাই। বয়স্কমণ্ডলীর মধ্যে যথন দেখিতে পাই, তাহারা পুথিগত বিদ্যা লইয়াই আছেন ; প্রত্যক্ষ ব্যাপারের সজীব শিক্ষাকে তাহারা আমল দেন না ; যখন দেখি, চিরাভ্যস্ত একই চক্রপথে শতসহস্রবার পরিভ্রান্ত হইবার এবং চিরোচারিত বাক্যগুলিকেই উচ্চকণ্ঠে পুনঃপুন আবৃত্তি করিবার প্রতি র্তাহাদের অবিচলিত নিষ্ঠl, তথুন ছাত্রদিগের জ্যোতিঃপিপাসু বিকাশোন্মুখ তারুণ্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়াই আমি চিত্তের অবসাদ দূর করিয়াছি। দেশের ভবিষ্যৎকে র্যাহারা জীবনের মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে বৃহন করিয়া অমানতেজে শনৈঃশনৈ উদয়পথে অধিরোহণ করিতেছেন, তাহাদিগকে অনুনয়সহকারে বলিতেছি, অন্তান্ত শিক্ষার সহিত স্বদেশের সকল বিষয়ে প্রত্যক্ষ পরিচয়ের শিক্ষা যদি তাছাদের না জন্মে, তবে তাহারা কেবল পওপাণ্ডিত্য লাভ করবেন, জ্ঞানলাভ করি বেন না। এদেশ হইতে কৃষিজাত ও খনিজ দ্রব্য দূরদেশে গিয়া ব্যবহার্য্য-পণ্য-আকারে রূপান্তরিত হইয়া এদেশে ফিরিয়া আসে ;পণ্যসম্বন্ধে এইরূপ দুৰ্ব্বল পরনির্ভরতা পরিত্যাগ করিবার জন্ত সমাজ দৃঢ়সঙ্কল্প হইয়াছেন। বস্তুত ঔদাসীন্ত ও অজ্ঞতাবশত দেশের বিধাতুদত্ত সামগ্রীকে যদি আমরা ব্যবহারেই না লাগাইতে পারি, তবে দেশের দ্রব্যে আমাদের কোন অধিকরই থাকে না, আমরা কেবল মজুরিমাত্র করি। আমাদের এই লজ্জাজনক দৈন্ত দূর করার সম্বন্ধে ছাত্রদের মনে কোনো দ্বিধা নাই। কিন্তু জ্ঞানের সম্বন্ধেও ছাত্রদিগকে এই একইভাবে সচেতন হইতে হইবে । দেশের বিষয়ে আমাদের যাহা-কিছু শিক্ষণীয়, বিদেশীর হাত দিয়া প্রস্তুত হইয়া বিদেশর মুখ দিয়া উচ্চারিত হইলে তবেই তাহ আমরা কণ্ঠস্থ করিব, দেশের জ্ঞানপদার্থে আমাদের স্বায়ত্ত অধিকার থাকিমো, দেবী ভারতীকে আমরা বিলাতী স্বর্ণকারের"গহনা পরাইতে থাকিব, এ দৈন্ত আমরা আর কতদিন স্বীকার করিব । আজ আমাদের যে ছাত্রগণ দেশী মোটা-কাপড় পরিতেছেন ও স্বহস্তে তাত-বোন শিখিতেছেন, তাহাদিগকে দেশের সমস্ত বৃত্তান্তসংগ্রহেও স্বদেশী হইতে হইবে। প্রত্যেক ছাত্র অবকাশকালে নিজের নিবাসপ্রদেশের ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম, ভাষা, সাহিত্য, বাণিজ্য, লোকব্যবহার, ইতিহাস, জনশ্রুতির বিবরণ সাধ্যমত আহরণ করিতে চেষ্টা করিবেন। এ কথা মনে রাখিতে হইবে, ইহাদের সকলেরই সংগ্রই যে আমাদের' সাহিত্যে ব্যবহারযোগ্য হইবে, তাহ নহৈ, কিন্তু এই
