পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বাদশ সংখ্যা। ] সাহিত্যপরিষদ \ (tos · পায়, তবেতাহ লইয়া বকবিকি করা কি তাহার পক্ষে আরো অবমানকর নহে ? সেইজন্ত আমি এই কথা বারবার বলিবার চেষ্টা করিয়াছি যে, নিজের দেশের কাজ যখন আমরা নিজেরা করিতে থাকিব, তখনই অন্তের কাছ হইতেও যথোচিত কাজ আদায় করিবার বল পাইব । নিজেরা নিশ্চেষ্ট থাকিয়া কেবলমাত্র গলার জোরে যাহা পাই, সেই পাওয়াতে আমাদের গলার জোর ছাড়া আর স্কুল জোরই কুমিয়া যায় । 廳 আমার অদৃষ্টক্রমে এই কথাটা আমাকে অনেকদিন হইতে অনেকবার বলিতে হইয়াছে— এবং বলিতে গিয়া সকল সময় সমাদরও লাভ করি নাই ;—এখন না বলিলেও চলে, কারণ এখন অনেকেই এই কথাই আমার চেয়ে অনেক জোরেই বলিতেছেন। কিন্তু কথাজিনিষটার এই একটা মস্ত দোষ যে, তাহা সত্য হইলেও অতি শীঘ্রই পুরাতন হইয়া যায়—এবং বরঞ্চ সত্যের হানি লোকে সহ করে, তবু পুরাতনত্বের অপরাধ কেহ ক্ষমা করিতে পারে না। কাজজিনিষটার মস্ত সুবিধা এই যে, যতদিনই তাহ চলিতে থাকে, ততদিনই তাহার ধার বাড়িয়া ওঠে। এইজন্যই বাংলাদেশের ভাষাতত্ত্ব, পুরাবৃত্ত, গ্রাম্যকথা প্রভৃতি দেশের সমস্ত ছোট-বড় বৃত্তান্ত সংগ্ৰহ করিবার জন্ত সাহিত্যপরিষদ যখন দেশের সভার একটি ধারে আসিয়া আসন লইল, আমরা আননো ও গৌরবে তাহার অভিষেককার্য্য করিয়াছিলাম। যদি বলেন, সাহিত্যপরিষদ এতদিনে কি এমন কাজ করিয়াছে—তবে সে কথাটা ধীরে বলিবেন এবং সঙ্কোচের সহিত বলিবেন। আমাদের দেশের কাজের বাধা যে কোথায়, তাহা আমরা তখনই বুঝিতে পারি, যখনই আমরা নিজেরা কাজ হাতে লই—সে বাধা আমরা নিজেরা—আমরা প্রত্যেকে । যে কাজকে আমরা আমাদের কাজ বলিয়া বরণ করি, তাহাকে আমরা কেহই আমার কাজ বলিয়া গ্রহণ করিতে এখনো শিখি নাই। সেইজন্য আমরা সকলেই পরামর্শ দিতে অগ্রসর হই, কেছুই সাহায্য করিতে প্রস্তুত হই না ; ক্রটি দেখিলে কৰ্ম্মকর্তার নিন্দ করি, অকৰ্ম্মকর্তার অপবাদ নিজের উপর আরোপ করি না,—ব্যর্থতা ঘটিলে এমনভাবে আস্ফালন করি, যেন কাজ নিষ্ফল হইবে পূৰ্ব্বেই জানিতাম এবং সেইজন্তই অত্যন্ত বুদ্ধিপূর্বক নিৰ্ব্বোধের উদ্যোগে যোগ দিই নাই। আমাদের দেশে জড়তা লজ্জিত নহে, অহঙ্কত—আমাদের দেশে নিশ্চেষ্টতা নিজেকে গোপন করে ন— উদ্যোগকে ধিক্কার দিয়া এবং প্রত্যেক কাজের খুৎ ধরিয়া সে নিজের শ্রেষ্ঠতা প্রমাণ করিতে চায় । এষ্টজন্ত আমাদের দেশে 4 पृथ সৰ্ব্বদাই দেখিতে পাই যে, দেশের কাজ একটিমাত্র হতভাগ্য টানিয়া লইয়া চলিয়াছে ; হাওয়া এবং স্রোত দুই উল্টা ; এবং দেশের লোক তীরে বসিয়া দিব্য হাওয়া খাইতে খাইতে কেহ বা প্রশংসা করিতেছে, কেহ বা লোকটার অক্ষমতা ও বিপত্তি দেখিয়া নিজেকে ধন্তৰ্ব্বান করিতেছে। •* * so এমন অবস্থায় দেশের অতি ক্ষুদ্র কাজটকেও গড়িয়া তোলা কত কঠিন, সে কথা আমরা যেন প্রত্যেকে বিবেচনা করিয়া দেখি। . একটা ছোট ইস্কুল, একটা সামান্য লাইব্রেরি, একটা আমোদ করিবার দল বা একটী অতি