পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@ቁፍU ইহাই বৰ্ত্তমান সময়ের প্রধান আলোচ্য । এই সময় নানা জনে নানা পন্থা দেখাইতেছেন। আমার মতে স্বদেশীব্রতে ঐকান্তিক নিষ্ঠাই একমাত্র -প্রকৃষ্ট পন্থা। আমাদের উদ্ধাবের আর অন্ত পন্থা নাই । স্বদেশীব্রতে ঐকাস্তিক নিষ্ঠা কি ?—কায়মনোবাক্যে স্বদেশী হওয়া । কেবল স্বদেশীদ্রব্য ব্যবহার করিলেই প্রকৃতরূপে স্বদেশব্রত উদযাপন করা হইবে না। আমাদের বাক্য, মন ও শরীরকে স্বদেশী করিয়া লইতে হইবে। আমরা যদিও স্বদেশী বলিয়া বাহিরে আড়ম্বর করিতেছি, কিন্তু আমাদের তথাকথিত শিক্ষিতসমাজ কি প্রকৃতরূপে স্বদেশী হইতে পারিয়াছেন । র্তাহাদের হৃদয়ে বিজাতীয় ভাব, বাক্যে বিজাতীয় ভাষা, মন বিজাতীয় প্রকৃতিতে গঠিত। র্তাহাদের মনে-প্রাণে বিজাতীয়ভাব অনুবিদ্ধ হইয়া গিয়াছে, তাহদের রক্তমাংসে বিজাতীয়ভাব প্রবেশলাভ করিয়াছে এবং তদমুলারে দেহ ও মনের অদ্ভুত পরিবর্তন হইয়া এক অদ্ভুত জীবের সৃষ্টি হইয়াছে। তাহাঁরা যাহাদের অনুকরণ করিতেছেন, তাহারাও র্তাহাদিগকে ঘৃণার চক্ষে দেখিতেছে এবং তাহারা যে (ಆ. হইতে গিয়াছেন, তাহারাও র্তাহাদিগ ে ভালরূপে বুঝিতে ও চিনিতে পারিতেছে না। আমরা যদি প্রকৃত মন্ত্রা লাভ করিতে চাই, তবে শরীর হইতে বিদেশীবস্ত্র যেরূপ ত্যাগ করিয়াছি, মন হইতেও সেইরূপ বিদেশীভাবের আবরণ বিসর্জন করিতে হইবে। ইহাই আমাদের শক্তিসঞ্চয়ের .একমাত্র উপায়। শুক্তিই এই জগতে পূজনীয়, শক্তিই এই জগতে আধিপত্য করিতেছে, শক্তির নিকটই दछअवस्थि । اتا ۹۹ نفی ] সকলে অবনত, শক্তিকে অধিককাল উপেক্ষা করে এমন সাধ্য কাহারও নাই। আমাদের মাতৃভূমিকে বর্তমান দুঃখদারিদ্র্য হইতে উদ্ধার করিতে হইলে শক্তি আবশুক । তাহা কেবল শারীরিক বল নহে,--কেবল শারীরিক বলের দ্বারা কাহাকেও কেহ সম্পূর্ণরূপে বশীভূত করিতে পারে না । কাহাকেও সম্পূর্ণরূপে আয়ত্ত করিতে বিশ্বতোমুখ বলের প্রয়োজন। শারীরিক, মানসিক, নৈতিক ও আর্থিক, সকলপ্রকার বলের প্রাচুর্য হইলে কাহার সাধ্য সেই সমন্বিত শক্তিকে উপেক্ষা করে। অতএব ' সকল বিষয়েই আমাদের বলসঞ্চয় আবশুক। এই বলসঞ্চয়েই আমাদের উন্নতি অবশুম্ভাবী। অনেকের মনে এইরূপ বিশ্বাস আছে, ভারত আবার এব দিন উন্নত হইবে । কিন্তু কিরূপে এই উদ্ধারকার্য্য সাধিত হইবে, ইহা প্রায় সকলের নিকট প্রহেলিকা বা গুঢ় রহস্তের দ্যায় ভবিষ্যতের গর্ভে লুক্কামিত। নানা জনে এ সম্বন্ধে নানারাপ জল্পনা-কল্পনা করিতেছে, কিন্তু স্থিরসিদ্ধান্তে কেহই উপনীত হইতে পারে নাই। আমিও স্থিরসিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি, এরূপ গৌরব না করিয়াও বলিতে পারি যে, আমার মনে হয়, এই পরিবর্তন অতি অলক্ষিত ও ধীরভাবে, অতি সহজ ও স্বাভাবিক উপায়ে সংঘটিত হইবে। ইহ ঘটিবার পূৰ্ব্বে কোন যুদ্ধবিগ্রহের প্রয়োজন হইবে না । ইহা রাত্রির পর দিনের দ্যায় ধীর .'s অতর্কিতভাবে উপনীত হইবে। দিবসারম্ভে যেরূপ ক্রমশ অন্ধকারের বিলোঁপে আলোক বিকশিত হইয়া উঠে, জ্ঞান ও শক্তির বিকাশে সেইরূপ যথেচ্ছাচারের অন্ধকার বিদূরিত হইবে। অন্ধকারের পাখীর ছায়