পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

éâte করিয়া,তাহার পদতলে দয়া, সৌজন্ত, মনুষ্যত্ব, সত্য, জ্ঞান, সকলই জলাঞ্জলি দিতেছে। এই অর্থের জন্য তাহারা হিংসাদ্বেষের বশবৰ্ত্তী হইতেছে এবং পরস্পরকে নানারূপ উপায় ও কৌশল উদ্ভাবন করিয়া অসঙ্কোচে বিনাশের মুখে ফেলিয়া দিতেছে। মনুষ্যহননের জন্ত তাহার কতপ্রকার অস্ত্রশস্ত্রের স্পষ্ট করিতেছে এবং , বুদ্ধিকৌশলে যে অধিকতর হননকারী অস্ত্রসকলের সৃষ্টি করিতে পারিতেছে, জগতে সে-ই অধিকতর সন্মানিত ও পুজিত হইতেছে। মানবজাতির রক্তপাতেই তাহাদের আনন্দ । যে অধিক রক্তপাত করিতে পারে, সেই জাতি শ্ৰেষ্ঠজাতি বলিয়া কীৰ্ত্তিত। একে অন্তের অর্থ কিরূপে আকর্ষণ করিতে পারবে, ইহারই উপায়-উদ্ভাবনে সকলে ব্যস্ত। ইহাই প্রকৃত মনুষ্যত্ব ও গৌরব বলিয়া গণ্য হইতেছে। সভ্যতাভিমানী বর্তমান জাতিসকলের বাহিক আড়ম্বর , ও চাক্‌চিক্যে বিমোহিত হইয়া আমরা এই সকল নীচ আদর্শের অমুকরণে ক্রমশ অধোগামী এবং গুণ অপেক্ষা দোষের অনুকরণ করিয়া পদে পদে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হইতেছি। যে স্থান প্রকৃত আমাদের নহে, তাহ অধিকার করিতে যাইয়া আমরা পতিত ও স্বস্থানভ্রষ্ট হইয়া বিকলাঙ্গ এবং অপরের নিকট হাস্তাম্পদ হইতেছি । বর্তমান পাশ্চাত্যুজাতির শ্রেষ্ঠত্ব বাহিক বিষয়ে, কিন্তু স্তরীণ। " জামাদের অধিকার, ও শক্তি বিভিন্ন। এরূপ অবস্থায় আমরা কিরূপে তাহাড়ের জীয়করণ করিয়া ডাহীদের সমকক্ষ বা তাদের অপেক্ষ শ্রেষ্ঠ হইব। এজণে ৰিম্বেশীভাব আমাদিগকে সৰ্ব্বথ बैअधंचन । প্রবঞ্চক ও সঙ্কীর্ণমনা হইয়াছি । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, চৈত্র। অধিকার করিয়াছে এবং সেই বিদেশীভাবের সংস্পর্শে আমাদের স্বকীয় ও স্বাভাবিক অবস্থার সম্পূর্ণ পরিবর্তন হইয়া গিয়াছে। আমরা আমাদের প্রাচীন ইতিহাসে দেখিতে পাই, প্রাচীন হিন্দুগণ আদশ সত্যপ্রিয়, সরল, উদার, স্বার্থত্যাগী ও ধৰ্ম্মপ্রাণ ছিলেন। তখনই ভারতের সত্যযুগ ছিল । বহুশতাব্দীর বিদেশীসংস্পশে এখন আমাদের ঘোর অধঃপতন হইয়াছে । এখন আমরা মিথ্যাবাদী বলিয়া কীৰ্ত্তিত এবং আমরা "ভয়ানক স্বার্থপর, লোভী ও ধৰ্ম্মবিমুখ নাস্তিক হইয়া পড়িয়াছি। এখন আমাদিগকে আর সেই হিন্দু বলিয়া চেনা যায় না । অধঃপাত ইহা হইতে আর অধিক কি হইতে পারে। বিদেশীয় ভাব ও আদর্শের অমুকয়ণই কি আমাদের এই অধঃপাতের কারণ নহে। আমরা বিদেশীর গুণের অনুকরণ করিতে না পারিয়া দোষেরই অনুকরণ করিতেছি,—আর সে অনুকরণে আমরা স্বার্থপর, অর্থলোলুপ, মিথ্যাবাদী, বিদেশর পুস্তকপীঠে আমাদের ধৰ্ম্মবিশ্বাস বিচলিত হইয়াছে। ধৰ্ম্মে বা আধ্যাত্মিক বিষয়ে আমাদের আস্থা বা বিশ্বাস নাই। যতই স্বদেশী বলিয়া গৰ্ব্ব করি না, অদ্যাবধি আমরা সম্পূর্ণরূপে বিদেশীভাবের দ্বারাই চালিত,—বিদেশীভাবের দাসত্বশৃঙ্খলে আমাদের হৃদয় ও মন সম্পূর্ণরূপে বদ্ধ ও বিজড়িত। যদি আমরা যথার্থ ই স্বাধীন হইত্ত্বে • চাই, তবে আমাদের দাসত্বপাশগুলি একে একে " ছেদন করা আবশুক। আমাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলি নিজে ও অপরের সাহায্য ব্যতীত । প্রভত করিয়া জাম্বাদের দেহকে যেমন