পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় সংখ্যা । ] পৃথিবীর ভারবুদ্ধি করিতেছে। এই ম্যালেরিয়া পূৰ্ব্ব হইতে পশ্চিমে, প্রদেশ ইষ্টতে প্রদেশান্তরে ব্যাপ্ত হষ্টয়া পড়িতেছে। প্লেগ এক রাত্রির অতিথির মত আসিল, তার পরে বৎসরের পর বৎসর যায়, আজও তাহার নররকপিপাসার নিবৃত্তি হুইল না। যে বাঘ একবার মনুষ্যমাংসের স্বাদ'পাষ্টয়াছে, সে যেমন কোনোমতে সে প্রলোভন ছাড়িতে পারে না, দুর্ভিক্ষ তেমনি করিয়া বাৰংবার ফিরিয়-ফিরিয়া দিতেছে। ইহাকে কি আমরা দৈবদুর্ঘটনা বলিয়া চক্ষু মুদ্রিত করিয়া থাকিব ? সমস্ত দেশের উপরে মৃত্যুর এই যে অবিচ্ছিন্ন জালনিক্ষেপ দেখিতেছি, ইহাকে কি আমর। আকস্মিক বলিতে পারি? 鬱 ইহ আকস্মিক নহে। ইহা বদ্ধমূল ব্যাধির আকার ধারণ করিতেছে।. এমনি করিয়া অনেক জাতি মারা পড়িয়াছে—আমরাও যে দেশব্যাপী মৃত্যুর আক্রমণ হইতে বিনা চেষ্টায় নিষ্কৃতি পাইব, এমন ত কোনো কারণ দেখি না । * আমরা চক্ষের সমক্ষে দেখিতেছি যে, যেসব জাতি সুস্থ-সবল, তাহারাও প্রাণরক্ষার জন্ত প্রতিক্ষণে লড়াই করিতেছে—আর আমরা আমাদের জীর্ণতার উপরে মৃত্যুর পুনঃপুন নখরাঘাতসত্ত্বেও বিনা প্রয়াসে বঁাচিয়া থাকিব? এ কথা আমাদিগকে মনে রাথিতে হইবে, প্লেগ-তুর্ভিক্ষ কেবল উপলক্ষ্যমাত্র, হলক্ষণমাত্র—মূল ব্যাধি দেশের মজ্জার মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে । আমরা এতদিন একভাবে চলিয়া আসিতেছিলাম— আমাদের হাট, বাটে, গ্রামে, পল্লীতে আমর * একতাৰে বাঢ়িবার ব্যবস্থা করিয়াছিলাম, জেশানায়ক । &&. আমাদের সে ব্যবস্থা বহুকালের পুরাতন তাহার পরে মাজ বাহিরের সংঘাতে আমাদের অবস্থান্তর ঘটয়াছে। এই নুতন অবস্থার সহিত এথনো আমরা সম্পূর্ণ আপোস করিয়া লইতে পারি নাই—এক জায়গায় মিলাইয় লইতে গিয়া আর-এক, জায়গায় অঘটন ঘটতেছে। যদি এই নূতনের সহিত আমরা কোনোদিন সামঞ্জস্ত করিয়া লইতে ন৷ পারি, তবে আমাদিগকে মরিতেই হইবে। পৃথিবীতে যে সকল জাতি মরিয়াছে, তাহার এম্‌নি করিয়াই মরিয়াছে। ম্যালেরিয়ার কারণ দেশে নুতন হুইস্বাছে, এমন নহে। চিরদিনই আমাদের দেশ জল-দেশ–বনজঙ্গল এখনকার চেয়ে বরং পূৰ্ব্বে বেশিই ছিল, এবং কোনোদিন এখানে মশার অভাব ছিল না। কিন্তু দেশ ੋਜ সচ্ছল ছিল। যুদ্ধ করিতে গেলে রসঙ্গের দরকার হয়—সৰ্ব্বপ্রকার গুপ্ত মারশত্রুর সহিতু লড়াইয়ে সেদিন আমাদের রসদের " অভাব ছিল না। " আমাদের * পল্লীর অন্নপূর্ণ সেদিন নিজের সস্তানদিগকে অৰ্দ্ধভুক্ত রাখিয়া টাকার লোভে পরের ছেলেকে স্তন্য দিতে যাইতেন না। শুধু তাই নয়, তখনকণর সমাজব্যবস্থায় পল্লীর জলাশয় খনন ও সংস্কারের জন্য কাহারো অপেক্ষ করিতে হইত না—পল্লীর ধৰ্ম্মবুদ্ধি পল্লীর অভাবমোচনে নিয়ন্ত জাগ্রত ছিল । আজ বাংলার গ্রামে গ্রামে কেবল যে জলবষ্ট হইয়াছে, তাহা নহে, প্রাচীন জলাশয়গুলি দুষিত হইয়াছে। এইরূপে শরীর যখন অম্লাভাৰে হীনবলু এবং পানীয়জল যখন শোধনাভাৰে রোগেৰু নিকেতন, তখন বাচিবার উপায় কি ? টুক্ষপে প্লেযুও