পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় সংখ্যা। ] করিয়া যাইভেছে, নিশান উড়িতেছে, আলো জলিতেছে, ব্যাও, বাজিতেছে। আমরা সন্ধ্যাকাশের অবিচলিত নক্ষত্ররাজি ও রাজবাতানের অনিমেষ দীপমালার প্রতি লক্ষ্য • করিয়া সকলের পশ্চাৎ হইতে . আমাদের “দরিদ্রাঞ্চাং মনোরথাঃ” অক্ষুণ্ণ অধ্যবসায়ের সহিত অবিশ্রাম নিবেদন করিয়া চলিলাম। এইভাবেংকত দিন, কত বৎসর কাটিত, তাহা বলিতে পারি না। এমন-সময় এই নিঃসহ নিশ্চলতার মধ্যে বিধাতার কৃপায় পশ্চিমআকাশ হইতে হঠাৎ একুটা বড়-রকম ঝড় উঠিল। আমাদের দেশহিতের জাহাজটাকে পুবের মুখে হুহু করিয়া ছুটাইয়া চলিল—অবশেষে যেখানে আসিয়া তীর পাইয়। বঁচিয়া গেলাম, চাহিয়া দেখিলাম, সে যে আমাদের ঘরের ঘাট । সেখানে নিশান উড়ে না, ব্যাণ্ড, বাজে না, কিন্তু পুরলক্ষ্মীরা যে হুলুধ্বনি দিতেছেন, দেবালয়ে যে মঙ্গলশঙ্খ বাজিয়া উঠিল। এতদিন অভুক্ত থাকিয়া পরের পাকশাল হইতে কেবল বড়-বড় ভোজের গন্ধটা পাইতেছিলাম,আজ যে দেখিতে দেখিতে সন্মুখে পাত পাড়িয়া দিল । আমরা জানিতাম না, এ যজ্ঞে আমাদের মাতা সীমাদের জন্ত এতদিন সজলচক্ষে অপেক্ষা করিয়া ছিলেন। তিনিই আজ দীর্ঘ বিচ্ছেদের পরে মুরেন্দ্রনাথের শিরণ ঘন করিয়া তাহাকে আপন কোলের দিকে টানিয়াছেন। আমরা অীজ থকে জিজ্ঞাসা করি, তিনি সেই পশ্চিমূব শাঙ্গা-পাথরে বাধানো সোনার দ্বীপে এমন মুদ্ধি সার্থকতা একদিনের জন্যও লাভ করিয়াছেন —এমন আশাপরিপূর্ণ অমৃতবাণী স্বপ্নেও শুনিয়াছেন? .. ' * .বিধাতার কৃপাবড়ে মুরেন্দ্রনাথের সেই &#नग्निके। đš জাহাজকে যে ঘাটে আনিয়া ফেলিয়াছে: ইহার নাম আত্মশক্তি। • এইখানে যদি আমরা কেনাবেচা করিতে পরিলাম, ত পারিলাম—নতুবা অতলস্পর্শ লবণামূগর্ভে ডুবিয়া মরাই আমাদের পক্ষে শ্রেয় হইবে। কাপ্তেন, এখানকার প্রত্যেক ঘাটে ঘাটে আমাদের বিস্তর লেনাদেনা করিবার আছে— শিক্ষাদীক্ষা,মুখস্বাস্থ্য,অন্নবস্ত্র,সমস্ত আমাদিগকে বোঝাই করিয়া লইতে হইবে—এবারে আর সেই রাজ-অট্টালিকার পুন্তগর্ভ গুম্বজটার দিকে একদৃষ্টিতে দূরবীণ কযিয়া নোঙর ফেলিয়া বসিয়া থাকিলে চলিবে না। আমরা আজ ফেযাহার ছোটখাট,মূলধন হাতে করিয়া ছুটিয়া আসিয়াছি – এবারে আর বাধাবন্দরে পুনঃপুন বন্দনাগীত গাওয়া নয়,—এবার পাহাড় বাচাইক্ল, বড় কাটাইয় আমাদিগকে পর করিতে হইবে কাপ্তেন্‌!—তোমার উপরে অনেকের ভরসা আছে-হাল ধরিয়া তোমার হাত শক্ত, ঢেউ থাইয়া তোমার হাড় পাকিয়াছে। এতদিন যে নামের • দোহাইপাড়িতে পাড়িতে দিন কাটিয়া গেল, সে • নাম ছাড়িয়া আজ যথার্থ কাজের পথে পাড়ি দিবার বেলায় ঈশ্বরের নাম কর, আমরাও এককণ্ঠে তাহার জয়োচ্চারণ করিয়া সকলে তোমার চতুদিকে সম্মিলিত হই। - . আজ অমুনত্বসহকারে আমীর দেশ বাসিগণকে সম্বোধন করিয়া বলিতেছি, আপনার ক্রোধের দ্বারা আত্মবিস্তৃত হইবেন না--কেবল বিরোধ করিয়া ক্ষোভ মিটাইবার চেষ্টা করিবেন না। ভিক্ষ কুরিতে গেলেও যেমন পরের মুখাপেক্ষা করিতে ছুয়, বিরোধ করিতে গেলেও সেইরূপ পয়ের°দিকে সমস্তু