পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tye হাত হইতে চিঠিখানি কাড়িয়া লইবার জন্ত হতাহাতি আরম্ভ করিল ও একজন তাহ কাড়িয়া লইয়া পড়িতে লাগিল। চিঠিপড়া শেষ হইলে সকলের মধ্যে এক তুমুল আনন্দকোলাহল উত্থিত হইল। “উপেনের বিয়ে – উপেনের বিয়ে” এই চীৎকারধ্বনিতে সমগ্র বাড়ীটি প্রতিধ্বনিত হইল। উপেন সিঁড়ির নীচে দাড়াইয়া তেল মাখিতেছিল। ছাত্রগণ যে যেখানে ছিল, সকলে আসিয়া উপেনকে সপ্তরণীর ছায় বেষ্টন করিয়া ফেলিল এবং প্রথমযৌবনমুলভ স্ফূৰ্ত্তি যুক্ত আনন্দব্যঞ্জক ব্যাপারদ্বারা তাহাকে অভিভূত করিয়া ফেলিল। একটি ছেলে রন্ধনশালা হইতে কিঞ্চিৎ বাটাহলুদ আনিয়া তাহা একটা মগের মধ্যে গুলিয়া উপেনের গায় ঢালিয়া" দিল । বীরেনবাবু এতক্ষণ দরজা বন্ধ করিয়া সেই “সমীপের” চিঠি পাঠ করিতেছিলেন, তিনি ও স্থির থাকিতে না পারিয়া একদোয়াত লালকালী “হাতে করিয়া নীচে নামিয়া আসিলেন এবং উপেনের গায় তাহ ঢালিয়া দিলেন। উপেন হাসিয়া বলিল—“এ বুঝি তোমার সমীপের' চিঠিপড়ার ফল ?” ইহা শুনিয়া সকলে উচ্চহাস্ত করিয়া উঠিল । এইরূপে মেসের সব ছেলে মিলিয়া উপেনের “গায় হলুদে’র কাজ তৎক্ষণাৎ শেষ করিয়া ফেলিল । দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ । ক্ষুদ্র ফরিদপুরসহরটিকে একটি বৃহৎ পল্লী वृनिष्ट,१ हि इन्। তাহার অবিরলসন্নিবিষ্ট স্নিগ্ধচ্ছায়াবহুল বটবৃক্ষশ্রেণী এবং শুমেলশম্পমণ্ডিত ‘ প্রান্তরের শোভা অতুলনীয়। ফরিদপুরের ঠিক দক্ষিণে “ঢোলসমুদ্র”নামক ৰক্ষাশর্ন । [ού τή ζαιοι একটি প্রকাও বিল ছিল। এই দশপনর বৎসরের মধ্যে পদ্মার বালী পড়িয় তাহ ভরিয়া গিয়াছে। এক সময়ে যে তরঙ্গসছুল বিশাল হ্রদ পাড়ি দিতে মাঝিগণ নৌকার “আগা গলুই’তে “জুধপানি” দিয়া পীরের নামে সিল্লী মানস করিত, আজ সেখানে গ্রাম বসিয়াছে। ইহা বিচিত্রলীলাময়ী পদ্মার একটি অদ্ভূত লীলা । এই ঢোলসমুদ্রের দক্ষিণ পাড়ে ফরিদপুর হইতে প্রায় তিনমাইল দূরে কাজলপুর গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি খুব প্রাচীন। প্রাচীন বলিয়া আম-কাশ-ভাল-তেঁতুল-বট প্রভৃতি-তরুময় নিবিড়বন-সমাকীর্ণ । এ গ্রামে ভদ্রলোকের বাস নিতান্তু অল্প । কাজলপুর বলিয়া নয়, বাংলার অনেক পুরাতন কে বল সৰ্ব্বত্রই এক্ট একই দশ । গ্রামে বনজঙ্গলের যে পরিমাণে বৃদ্ধি, প্রাচীন সয়াস্তবংশসকলের সেই সমুপাতে ক্ষয় । এ গ্রামের অধিকাংশ লোকই মুসলমান ও নমঃপূদ্র কৃষিজীবী। কায়স্থবংশসস্তুত রমানাথ দত্তই একমাত্র সম্পন্ন গৃহস্থ । তিনি এ গ্রামের তালুকদার। তাঙ্গর চারি সঙ্গেদর ছিলেন—দ্বারকানাথ, রমানাথ, হরিনাথ ও ষড্ৰনাথ । ইহাদের মধ্যে কেবল রমানাথই জীবিত আছেন, আর তিন ভাই অকালে মরিয়া গিয়াছেন । জ্যেষ্ঠ . দ্বারকানাথ ফরিদপুরে মোক্তারি করিতেন, এখন তাহার বিধবা স্ত্রী জয়দুর্গ ও তিনটি কন্যা বর্তমান । হরিনাথ ফরিদপুরে কালেক্টরির পেস্কার ছিলেন, তাহার বিধবা স্ত্রী, তিনটি পুত্র ও দুইটি কন্ঠ জীবিত। যদুনাথ অল্পবয়সে । কালগ্রাসে পতিত হন ; তাছার বিধবা স্ত্রীও