পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৬৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ সংখ্যা । ] • প্রখণ্ডেই রহিয়া গেলেন, অথচূর্তাহার শ্বশুরা, লয় আমোদপুৰ কাকুট গ্রামে তাহার উদ্ভিন্ন যৌবনী দিন দিন শিশিরমথিত পদ্মিনীর, মত বিরহে স্নান হইতেছিলেন। বহু নিৰ্ব্বন্ধে তিনি একদিন পদব্রজে শ্বশুরালয় অভিমুখে চলিলেন, কিন্তু বিধাতার ইচ্ছা অঙ্গরূপ ছিল। গ্রামে প্রবেশ করিয়া পথিপার্থে একটা যুবতীর সাক্ষাৎলাভ করিয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন “মাতঃ, কোন পথে যাইব ?” পরে জানা গেল সেই যুবতীই তাহার স্ত্রী।. লোচন স্থির করিলেন ইহা ৰিধাতারই ইচ্ছা, বিষাদে ফল নাই। ভগবত্ৰ স্বামী-স্ত্রী সেই দিন হইতে মার্জীবন ব্রহ্মচর্য্য পালন করিয়াঁ বসবাস করিতে লাগিলেন । তাঙ্গাদের দাম্পত্যপ্রেমের পুষ্পাঞ্জলি তিনি প্রাণের দেবতার পদে অৰ্পণ করিলেন, ক্ষুদ্র দাম্পত্য-প্রেম বিশ্বপ্রেমে পরিণত হইল। অথচ শেষ পর্য্যন্ত তাহার স্ত্রীর প্রতি একান্ত অনুরাগের পরিচয় চৈতন্তমঙ্গলে পাওয়া যায়। এই অপুৰ্ব্ব গ্রন্থ তিনি স্ত্রীর অনুমতি লইয়াই রচনা করেন । ছুৈক্তমঙ্গলের প্রথমেই এই পদটা আছে :– প্রাণ ভায়া নিবেদে নিবেদে নিজ কথা । আগে আশীৰ্ব্বাদ মাগে৷ যত যত মহা ভাগ তবে সে গাইব গুণগাথা ॥” 釁 এই যতিপুরুষ গৌর প্রেমযজ্ঞে কামের আহুতি দিয়া যে অমৃত লাভ করিয়াছিলেন, তাহাতে কত যে তাপিত ভূষিতজন সঞ্জীবিত, : স্থলর হইয়াছে তাহার,আর সীমা | লোচনদাস। כי מט\ ১৫৮৯ খ্রীঃ ২৯শে পৌষ ৬৬ বৎসর বয়সে র্তাহার তিরোভাব ঘটে। ঐ উপলক্ষে অজয়নদীতীরে লোচনডাঙ্গায় তিনূদিবসব্যাপী বহু লাকীর্ণ এক মেলা বসিয়া থাকে। কেহ কেহ বলেন উক্ত মেলার প্রবর্তক স্বয়ং লোচনদাস। কোগ্রামের পূর্ব নাম অনুসরণ করিয়াই বোধহয় উহা উজানীর মেলা নামে অভিহিত হইয়া আসিতেছে। • 刹 কুমুর নদীর তীরে আজিও কোগ্রামে লোচনের সমাধি রহিয়াছে। প্রতিদিন সেই সমাধি মোস্তগণ ও বহুদূরসমাগত বৈষ্ণব গণকর্তৃক পূজিত হয়। উহা কবির সমাধির উপযুক্ত স্থানই বটে, উপরে আকাশের নীল চন্দ্ৰাতপ-চারিদিকে হরিৎ তৃণ ক্ষেত্র, সমাধিপ্রদেশ কুসুমিত মাধবী-লতাদাম পরিবেষ্টিত ; মাধবী-কুসুম যেন প্রকৃতির পুষ্পাঞ্জলির মত দিবানিশি বর্ষিত হইতেছে। কবিত্ব । “চৈতন্ত মঙ্গল” কাব্যে কবি ইতিহাসের নীরস অস্থিপঞ্জর ভাব প্রবাহে সরস ও কল্পনার অপরূপ লাবণ্যে ভূষিত করিয়াছেন। এবং অমুবীর ইতিহাসের-যেখানে একটু অবকাশ স্থাইয়াছেন, সেইখানেই কবিতার গুমনিকুঞ্জ প্রতিষ্ঠত করিয়াছেন, তাহ শ্ৰদ্ধেয় দীনেশচন্দ্র সেন মহাশয় ইতিপূৰ্ব্বে দেখাইয়াছেন। তাহার , কবিত্বেরসোণার কাঠি স্পর্শে যেন নিৰ্জ্জীব কঠোর সত্যও চকিতে সরস ও সজীব হইয়া উঠিয়াছে। এবং চৈতন্যমঙ্গল, কেবলমাত্র শ্রীচৈতন্তের জীবন চরিত না হইয়া, যেন তাহার সুখ দুঃখ বিরহ-মিলন, মান-অভিমান, জয়-পরাজয়, ধ্যান • ধারণা, সাধ্য সাধন, প্ৰেম,ভক্তির উচ্ছ,সি,