পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৬৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 מט\ লোচন দাসের কবিতা অত্যন্ত সরল খাটা বাঙ্গালা ভাষায় রচিত ; তাহাতে অলঙ্কারের ঘনঘটা বা কল্পনার ছটা নাই। অলৌকিক । শাদিকতা এবং ছন্দের ঝঙ্কারও তাহতে বিরল। গ্রেমের ভাষা তাবসৰ্ব্বস্ব হৃদরের ভাষা বলিয়াই বোধ হয় তাহার কৃত্রিম বেশ, ভূষার বড় একটা প্রয়োজন হয়ু নাই। ভাষা বড় স্বচ্ছ, বড় সরল, কিন্তু ভাব বড় গভীর অতলম্পর্শ তাবস্রোতে ডুবিলে কুল কিনারা পাইবার যো নাই । ঐচৈতন্ত মহাপ্রভুর রূপ বর্ণনা উপলক্ষে কবি বলিতেছেন – “রূপ লাগি আঁখি ঝুরে গুণে মন ভোর । প্রতি অঙ্গ লাগি কঁদে প্রতি অঙ্গ মোর ॥”

  • প্রতি আর লাগি কাদে প্রতি মঙ্গমোর" এই একটিমাত্র ছত্রে ক্ষমতাশালী কবি যে গভীরভাব, বিরহের তীব্রত, আকুল মিলন লালসা, অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় ফুটাইয়া তুলিয়াছেন, তাহ অন্ত কবির কাব্যে ছন্নভ। অথচ হাহুতাশ নাই, বৃথা আড়ম্বর কিম্বা বিশাল বাকুজালের রচনা কুহেলি নাই, বিরহের বৃশ্চিক সংশন কিম্বা জালাময়ী, লালসার তীব্র শিখা নাই । ইহাই লোচনদাসের বিশেষত্ব। একস্থলে কবি বলিতেছেন – “আমার নয়ন বলে গুরূত্থ দেখে আসি । '

আমার মন বলে তার হইগে দাসী ॥ করি নয়নপথে আনাগোনা। . আমার পাজর কেটুে করলে থান ।” গৌরাঙ্গের রূপবর্ণনু উপলক্ষে কবি ৰলিতেছেন – o "ও বা কে রসের দে, রূপের সীমা নাই । কোন বিধি, গ্রেনিধি কৈল এক ঠাই ॥ रॉअनश्वबि । । [ ৭ম বর্ষ, চৈত্র,-১৩১৪ ' যুগান্ডুরু; কামের গুরু ছাড়ছে ফুলের বাণ।. ’কেমুন ষ্ট্রর ধল তুলি করেছে নিৰ্মাণ। . র্তাথির তল নিরমল নীলকমলের দল । অরুণত দুটা পাতা করছে ছলছল i * , তুিল ফুল কিসে ভুল এমনি নাসার শোভা। কুঁদে কাট পরিপাট কিক দন্তের আভা। হিস্কুল ভালে হরিতালে নবনী দিল ভেজে। কাঁচাসোনা চালখানা রসান দিল মেজে। আলতা তুলি দুধে গুলি কর দিয়াছে ছেনে। চাদকে আনি ছানি ছানি তায় রসাল জেনে ॥ রূপের নাগর রসের সাগর উদয় হু’লে এসেন নাগরী লোচনের মন তাইতে গেল ভেসে।” शनाख्ब, “চরণতলে অরুণ খেলে কমল শোভে তায় । চলে চলে ঢলে ঢলে পড়ছে সখার গায় ॥ আমাপানে নয়নকোণে চাইল একবার। মনহরিণী বাধা গেল ভুরুপাশে তার ॥” রূপমুগ্ধা কোন যুবতীর ग्रंथ কবি বলিতেছেন – “অঙ্গঘটা রূপের ছটা পথে চলে যায়। গৌররূপের ঠমক্‌ দেখে চমক লাগে গায়। হটাৎ কারে দেখতে গেলাম এমন কে তা . জানে। অনুরাগের ভুরি দিয়া মনকে ধৈর টানে। "আমার গৌরাঙ্গ নাচে হেম কিরনিয়া । হেমের গাছে গ্রেমের রস পড়ছে চুয়াইয়া ॥ ঠারঠমৃক কাকালবাক মধুর মাখা হালি। " রূপ দেখিতে জাতিকুল হারাই হারাই বুলি। “প্রতি অঙ্গ নিরূপম কিবি তুলনা । হিয়ার আরতি মাত্র করিয়ে বােটন ? এইরূপ অতি সহজ কথায় কবি আমাদের হৃদয়ে বিরহমিলনের যে বিচিত্র কাহিনী ধ্বনিত

. করেন তাংরি তুলনা নাই।