পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧8 তাহার অমরতুলিকায় তিনি যে সৌন্দৰ্য্য অঙ্কিত করিয়াছেন, তাহা সঙ্কীর্ণ নহে, তাহ বৃহৎ—তাহ বিপুল—তাহা উদার । তাহ সমগ্র বিশ্বের অনন্ত সৌন্দর্য্যের আভাস আমাদের বিস্ময়বিহ্বল নয়নের সম্মুখে ধারণ করে। যাহারা তাহার রচনা পাঠ করিয়াছেন, তাহার সকলেই এই মোহিনী শক্তির পরিচয় পাইয়া ছেন। তাহার যে সকল কবিতায় সৌন্দর্যের যে-কোন বিশেষমূৰ্বর সহিত নিবিড় স্নেহপরিচয় লাভ করা যায়, সকলগুলিতেই এক অখণ্ড পূর্ণসৌন্দর্যের ইঙ্গিত আছে। এই লক্ষণই শ্রেষ্ঠ ফবিত্বের লক্ষণ । ইহারই প্রেরণায় বসন্তদেব সগৰ্ব্বে বলেন— & “আমি ঋতুরাজ । জর মৃত্যু দুই দৈত্য নিমেষে নিমেষে বাহির করিতে চাহে বিশ্বের কঙ্কাল, 钴 আমি পিছে পিxছ ফিরে’ পদে পদে তারে করি আক্রমণ ; রাত্রিদিন সে সংগ্রাম । আমি অথিলের সেই অনস্তবেীবন ।” রবীন্দ্রনাথ তাহার বিপুল পূর্ণস্বর বংশীধ্বনির সঙ্কেতে সৌন্দর্যোর যবনিকার পর যবনিক উন্মুক্ত করিয়া আমাদিগকে সেই বিশ্বের পৃষ্ঠাভূত সৌন্দর্য্যের রাজরাজেশ্বরের স্বর্ণকুহেলিকায় আবৃত মহারহস্তময় সিংহাসনের পদপ্রান্তে লইয়া যান। সৌন্দর্যের এই শ্রেষ্ঠ উপাসকের সঙ্গীতে আমরা প্রকৃতিদেবীর অজস্র স্নেইস্তন্তধারায় প্রবাহিত “সৌন্দর্য, ੋ4 এবং আনন্দে” পুষ্ট মানবায়ার প্রসার ও পূর্ণতা অনুভব করি, এবং এই পুত উপাসনার উৎসর্গীকৃত মানবজীবনের জন্মমরণভয়বজ্জিত জয়গান শুনিতে পাই। *. g কবির এই অন্তরতম ভাব, 4ಕೆ cos বঙ্গদর্শন। ক্ষমতা ও আমার নাই । [ ৭ম বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৪ উপাসনা তাহার জীবনে কিরূপে ক্রমশ পরিণতিলাভ করিয়াছে, তাহা তাহার রচনার ভিতর দিয়া সঙ্ক্ষেপত দেখিতে চেষ্টা করিব । নিয়মবদ্ধ বৈজ্ঞানিক উপায়ে রচনাগুলিকে বিশ্লেষণ করা আমার উদ্দেশু নহে। সে যে সত্যের বীজ সহজে এই মহাপ্রাণ মানবের হৃদয়ে অঙ্কুরিত এবং তাহার আনন্দে পুষ্ট হইয় ফলপুষ্পমঞ্জরীপরিশোভিত শু্যামস্নিগ্ধ গগনস্পশী মহাবৃক্ষে পরিণত হইয় তাহার কবিজীবন সার্থক করিয়ছে, সে সত্যের বিশ্লেষণ কিরূপে হইতে পারে, তাঙ্গ জানি না। কবিতার দেহের বিশেষণ হইতে পারে, তাহার প্রাণরূপী অন্তরতম ভালের বিশ্লেষণ হইতে পারে না । সমধম্মী বা বিপরীতধৰ্ম্ম: অপর মহাভাবের ক্তিত তাঙ্গর তুলনা চলিতে পারে মাত্র । এই পরিণতি দেখিতে গেলে দেখিতে পাই যে, প্রকৃতিমাষ্ঠ তাঙ্গার অঞ্চলে সৌন্দর্য্য ও আনন্দের যে অসংখ্য কণারাশি তাহার স্নেহলালিত সৌভাগ্যবান 'সস্থানগুলির জঙ্গ ছড়াইয়ু বুপিয়াছেন, আমাদের কিশোর কবি সেই গুলির এক একটিকে দেখিতেছেন আর বিহুবলহর্যে সৌন্দর্য্যের প্রতিঘাতজনিত ভাবরাশি পান করিতেছেন। এই হর্ষ বৃহত্তর আনন্দের ছায়া আনিয়া দিতেছে । কিন্তু সেই বৃহত্তর আনন্দের—বিশ্বের সংহত সৌন্দর্ঘ্যের প্রতিঘাতজনিত বৃহত্তর আনন্দের---দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাথিতে তাহার অবসর নাই। কি আনন্দে এই বিশ্লিষ্ট সৌন্দর্য্যকণাগুলির প্রাণের সঙ্গে আপনার প্রাণ মিশাইতেছেন, তাহা এই কয়টি ছত্রে প্রকাশ পাইতেছে —