পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় সংখ্যা। ] কবিতাসম্বন্ধে দুইচারিটি কথা। نيسيا * ইহ দেখিয়া আমার মনে হয়, ভীষণা প্রকৃতির ছায়ামাত্র দেখিয়া ভীষণার মুখের অবগুণ্ঠন-উন্মোচনে চেষ্ট না করিয়া কবি বারবার মোহিনীরই পদপ্রান্তে লুষ্ঠিত হইয়াছেন। দরিদ্র, পূর্ণসুখদানে অক্ষমা মাতার রূপে তিনি ধরণীকে দেখিয়াছেন ; কিন্তু ভীষণু যন্ত্রণাদানে সম্পূর্ণসক্ষমা, আপনার হৃদয়রক্তপানে আপনি স্তৃপ্ত, মহাভয়ঙ্করী ছিন্নমস্তাকে দেখিতে চান নাই। আমরা দেখি, স্নেহের সস্তানগুলিকে আকণ্ঠ স্বপ্নস্তন্ত পান করানোর ঐকাস্তিক আগ্রহ ধরিত্রীতে আরোপিত হইয়াছে— কিন্তু হতভাগ্য জীবলোকের দারুণ যন্ত্রণাদানের ইচ্ছা কাহার উপর আরোপিত হইয়াছে, তাহ বুঝিতে পারি না । ইহাতে খুষ্টানদিগের কল্পিত পুণ্যময় ঈশ্বর ও পাপের অবতার সয়তানের চিত্র আমাদের মনে উদিত হয় । “বমুন্ধরা” শীর্ষক কবিতায় কবি এই ধরিত্রীকে সম্বোধন করিয়া বলিতেছেন— * “আমারে ফিরায়ে লছ, অরি বসুন্ধরে । কোলের সন্তানে তব কোলেৰ ভিতরে, বিপুল অঞ্চলতলৈ। ওগো মা মৃন্ময়ি, তোমার মৃত্তিকামাঝে ব্যাপ্ত হ’য়ে রই ; দিগ্বিদিকে আপনারে দিই বিস্তারিয়া" বসন্তের আনুনের মত ; বিদারিয়া— এ বক্ষপঞ্জর, টুটিয়া পাষাণবন্ধ 齡 সঙ্কীর্ণ প্রাচীর, আপনার নিরানন্দ অন্ধ কারাগার,—ছিল্লোলিয়া, মৰ্ম্মপ্লিয়, , কম্পিয়া, খলিয়, বিকিরিয়া, বিচ্ছুরিয়৷ শিহরিয়া, সচকিয়, আলোকে পুলকে এৰাছিয়া চলে যাই সমস্ত ভূলোকে।" ইহাতেও সেই নৃত্য, গীত, রূপ এবং বিচিত্র স্বখেয়ই অসম্ভ কৃষ্ণ ভাষা পাইয়াছে। এই কবিতায় তিনি বিশ্বের অজস্র “আনন্দমদিরাধারা” কি কি রূপে পান করিবেন বলিতে বলিতে বলিয়াছেন— “হিংস্র ব্যাঘ্র আটবীর— আপন প্রচণ্ডবলে প্রকাও শরীর বহিতেছে অবহেলে ; দেহ দীপ্তোজ্জল অরণ্যমেঘের তলে প্রচ্ছন্ন-অনল বজের মতন–রুদ্র মেঘমন্দ্র স্বরে ‘ · পড়ে আসি অতর্কিত শিকারের পরে বিদ্যুতের বেগে, অনায়াস সে মহিমা— হিংসাতীব্র সে আনন্দ-সে দৃপ্ত গরিমা— • ইচ্ছা করে একবার লভিবার স্বাদ ।” আমাদের কবি অপর জীবের যন্ত্রণার উপর - প্রতিষ্ঠিত “হিংসাতার আনন্দ” পান করিতে চাহিয়াছেন–কিন্তু আক্রান্ত মৃগের চক্ষে ষে নিঃসহায় ভাষাহীন দারুণ বেদন ফুটিয়া উঠে, সেই রিক্ত বেদনার আস্বাদু লইতে অগ্রসর হইতে তাহাকে কখন দেখি নাই। অধ্যাপক মোহিতচন্দ্র সেন সম্পাদিত রবীন্দ্রনাথের “ কাব্যগ্রন্থের নূতন সংস্করণে এই অংশটি পরিত্যক্ত হইয়াছে। কেন পরিত্যক্ত হইয়াছে, বুঝিতে পারি নাই। সাধারণ মানবের হৃদয়ে জীবত্বহেতু যে স্বাভাবিক শোণিতপিপাসা বৰ্ত্তমান দেখা যায়, কবিহ্বদয়ে তাহারই অলক্ষিত প্রতিবিম্ব দেখিয়া কি সম্পাদক কুষ্ঠিত বা ভীত হইয়াছেন ? আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায় থ এই কুণ্ঠ বা ভয়ের কোন কারণ নাই। যতদিন পৃথিবীর est fintre “positive pain” বা সদ্বস্তু বেদনার সন্মুখীন হইবার বীর্যের উপলব্ধি না-হয়, ততদিন মানবহৃদয়ে এই হিংসাতীব্র অীনদের পিপাসার মস্তিত্ব ভালই মনে করি। হিংসার সহিত এই ভীষণ যন্ত্রণার বড়ই