পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@ বঙ্গবিজেতা । دما মহীশ্বত চিত্ত করিতে লাগিলেন । উক্ত পাগলিনী দুই তিন বার এই প্রকার সহসা দেখা দিয়া য়ে যে ভবিষ্যৎ কথা বলিয়াছিল, কখন মিথ্য হয় নাই । তিনি অন্তরে নিশ্চয় জানিলেন যে, সেই পামর সতীশচন্দ্র আবার সমরসিংহের নিরাশ্রয় বিধবার অনিষ্টচেষ্টা করিতেছে, পাগলিনী মানুষী হউক বা প্রেত-কন্যা হউক, জানিতে পারির সতর্ক করিবার জন্য আসিয়াছিল। অনেকক্ষণ চিন্তা করিয়া বলিলেন, “অদ্যই পলায়ন করা শ্ৰেয়ঃ-উপায়ান্তর নাই ।” ইন্দ্রনাথ জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোথায় যাইবেন,—আমার আলিরে আপনাকে আহবান করিতে আর ভরসা করি না ।” * মহাশ্বেতা উত্তর করিলেন, “ মহেশ্বর-মন্দিরের মহন্ত চন্দ্রশেখরের নিকট পুনৰ্ব্বার যাইব ।” ইন্দ্রনাথ কিঞ্চিৎ ক্ষুণ্ণ হইলেন, কোন উত্তর করিলেন না । তৎক্ষণাৎ গ্রাম পরিত্যাগ করিবার উদ্যোগে গমন করিলেন । মহাশ্বেতা সরলাকে নিদ্র হইতে তুলিয়া সবিশেষ বলিলেন। সরলার বালিকা-মুখ-মওল গম্ভীর হইল । রুদ্রপুর গ্রামে ছয় বৎসর কাল থাকিয়া সকল দ্রব্যে মায়া হইরাছিল । সেই পরিপাট কুটার, সেই উদ্যান, সেই স্বহস্তরোপিত পুষ্পচার, সকলই ত্যাগ করিতে হইবে। প্রাতঃকালে উঠিয়। আর রুদ্রপুরের পক্ষিদিগের সুললিত গান শুনিতে পাইবে না, দুই প্রহরে সেই আম্রবৃক্ষের নিস্তব্ধ স্নিগ্ধ ছায়াতে উপবেশন করিয়া আর কার্য্য করা হইবে ন-সন্ধ্যায় অমলার সেই সুমধুর হাস্তবিকসিত মুখ আর দেখিতে পাইবে না। অমলার কথা স্মরণ হওয়াতে চক্ষুতে জল আসিল, বলিল,— “ ম), আমি সইয়ের নিকট বিদায় লইয়া আসি ।” মহাশ্বেত বলিলেন, “যাও মা, কিন্তু শীঘ্র আইস ” সরল বিদায় লইতে চলিল । অমলার গৃহের নিকট যাইয়া ডাকিল, “ সই!” প্রফুল্লবদন অমল গৃহের বাহিরে আসিল । কি তামাসা করিবে বলিয়। তাহার অধরোষ্ঠ হাসিঙে বিস্ফারিত ; বলিল “ এত রাত্রিতে ?” আর কথা বাহির হুইল না। . সরলার মুখপানে চাহিয়৷ অমলার প্রফুল্ল মুখ গম্ভীর হইল ; অধরের হাসি শুকাইয়। গেল, দেখিল সরলার নয়নযুগল জলে ছল ছত্ৰ করিতেছে, টপ্ টপ্‌ করিয়া বক্ষঃস্থলে জল পড়িতেছে । অমলা নিকটে আসিয়া স্নেহভরে হস্তধারণ করিয়া জিজ্ঞাসা করিল “কি সই, কি হুইয়াছে ?” "ী, সরল উত্তর করিল, “ ম৷ বলিয়াছেন, আমরা এই গ্রাম হইতে অদ্যই লিয়া যাইব,—তোমার সঙ্গে বোধ হয়, এই শেষ দেখা, বলিয়৷ শল্পঞ্জ