পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§ ৰঙ্গবিজেতা ৷ ෆුෂී স্বীকার করিব, পুনরায় ক্ষমা প্রার্থনা করিব, যদি ক্ষমা না পাই, আমার অকিঞ্চিৎকর শোণিত দিয়া সমরসিংহের রক্তপ্রবাহ বৰ্দ্ধন করিব।” পরক্ষণেই শকুনি কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিলেন, বলিলেন, "এ কি ? অন্ধকারে একাকী বসিয়া আছেন কেন ?” সতীশচন্দ্র অতিশয় গম্ভীরস্বরে উত্তর করিলেন, “ আলোক সহ্য করিতে পারি না, হৃদয়ে দুর্ভেদ্য অন্ধকার ব্যাপ্ত রহিয়াছে । আমায় জীবনালোকও শীঘ্ৰ অনন্ত অন্ধকারে লীন হইবে, আমার লীলাখেল সাক্ষ প্রায় ।” শকুনি এ কথার উত্তর দিতে পারিলেন না, ভৃত্যকে আলোক আনিতে ইঙ্গিত করিলেন। ভূত্য শীঘ্ৰ আলোক অনিয়া পুনরায় কক্ষ হইতে প্রস্থান করিল। সতীশচন্দ্র পুনরায় বলিতে লাগিলেন, “শকুনি ! তোমার পরামর্শেই আমি এতদূর কার্য্য করিয়াছি, তাহাতে কি ফল হইল ? আমার পরকাল অনেক দিনই গিয়াছে, এক্ষণে ইহকালেই সৰ্ব্বনাশ উপস্থিত । এই পাপরাশিতে, এই বিপদূরাশিতে তুমিই আমাকে নিক্ষিপ্ত করিয়াছ, এক্ষণে আর কি করিবে, আমাকে পরিত্যাগ করিয়৷ অন্য কোন উন্নতিশালী লোকের সৰ্ব্বনাশ কল্পনা কর ; আমিও, এ ঘোর পাপের যদি প্রায়শ্চিত্ত থাকে, তাহান্তে প্রবৃত্ত হই ।” শকুনি প্রভুর গম্ভীরস্বর শুনিয়া চমকিত হইলেন । বুঝিলেন, প্রভুর হৃদয়ে সামান্য ক্রোধ ও ক্ষোভের উদ্রেক হয় নাই ; দুই চারি কৈতব অশ্রুবিন্দু দেথাইয়া শকুনি উত্তর করিলেন – " প্রভুর গৌরবকালে তাহারই স্নেহভাজন হওয়া ভিন্ন তামার অন্য অভিলাষ ছিল না,—যদি সৰ্ব্বনাশ যথার্থই উপস্থিত হয়, প্রভুয় সৰ্ব্বনাশের ভাগী হওয়া ভিন্ন আমার দ্বিতীয় অভিলাষ নাই ।” সতী। “শকুনি ! তোমার কথা অতি মিষ্ট,—বিধাত এমন বিষপাত্র ক্ষীরদ্বারা আবৃত করিয়াছেন ?” শকু “আমি পাপিষ্ঠ বটে, তা না হইলে প্রভুভক্তির এই ফল ফলিবে কেন ?” এই বলিয়। শকুনি আর দুই চারিট অশ্রুবিন্দু বাহির করিলেন । সতীশচন্দ্র দেখিয়া কিছু মুগ্ধ হইলেন, বলিলেন “ তুমি আমার উন্নতিচেষ্টা কর, তাহ। আমি জানি, কিন্তু পাপপথে সৰ্ব্বদাই বিপদ। শকুনি ! সে পথ ভিন্ন কি আর উন্নতির পথ ছিল না ?” শকুনি দেখিলেন, তাহার অশ্রুবিন্দু নিতান্ত নিষ্ফল হয় নাই, কাতরস্বরে বলিতে লাগিলেন, “প্রভুভক্তি যদি পাপ হয়, তবে আমি পাপিষ্ঠ বটে, $ তাহ ভিন্ন পাপ কি, আমি জানি না।”