পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গবিজেত । ثهه ده সেই সায়ং কালে দুই জন নদীতীরে 1. ছিলেন । তাহাদিগের মধ্যে এক জন আমাদিগের পুৰ্ব্বপরিচিত সরল, অন্ত জনের নাম কমলা । কমলা অনেক দিন অবধি এই আশ্রমে বাস করিতেছিলেন । তিনি ব্রাহ্মণকস্তা, বয়ঃক্রম অষ্টাদশ বর্ষ হইবে । তিনি কাহার দুহিতা, কাহার বনিতা, তাহার স্বামির কত দিন মৃত্যু হইয়াছে, এ সকল কথা কেহ জানি তেন না, জিজ্ঞাসা করিলে কমলা ক্ৰন্দন করিতেন সুতরাং কেহ জিজ্ঞাসাও করিতেন না । কমলার স্বভাব ও আচরণ দেখিয়া ত্যাশমবাসীগণ বিস্মিত হইতেন । কমল সততই শান্ত, অন্ত্যমনস্ক ও চিত্তাশীল । যেস্থানে আশ্রম-পাদপপুঞ্জ অতিশয় নিবিড় ও অন্ধকারমর, যেস্থানে মনুষ্যের শব্দমাত্র নাই, মধ্যাহ্নকালে লোকালয় ত্যাগ করিয়া কমল৷ সেই নিভৃত স্থানে একাকী চিন্তু করিতে ভালবাসিতেন, মধ্যান্ত্রে অতি মৃদ্ধনিঃস্থত ঘুঘুর প্ৰেমগীত শুনিতে ভালবাসিতেন । যেখানে আম্রবৃক্ষের পদ প্রক্ষালন করিয়া ইচ্ছামতী কুল কুল শব্দে প্রবাহিত হইত, গভীর রজনীতে কমলা সেই স্থানে যাইয়। বসিয়া চিন্তা করিতে ভালবাসিতেন ; নদীর অনন্ত কুল কুল ধ্বনি শুনিতে তালবাসিতেন। সে অনন্ত ধ্বনি শুনিতে শুনিতে কমলা যে অনন্ত চিত্ত করিতেন, সে চিত্ত৷ কিসের ? কে বলিবে কিসের ? চন্দ্রশেখর কমলাকে আপন গৃহে রাখিয়াছিলেন, আপন কস্তার মত যত্ন করিতেন, কিন্তু কমল। গৃহে থাকিবার সময় সৰ্ব্বদাই তন্ত্যমনস্ক হইয়। থাকিতেন, অন্তের সহিত কথা কহিতে কহিতে কখন কখন চিত্তায় মগ্ন হইতেন, তা হাতে লোকে হাসিলে আবার লজ্জিত হইয়া কথাবার্তা তারস্ত করিতেন । সে কথাবাৰ্ত্তা কি মধুর, কি ভাবপরিপূর্ণ ! শ্রোতার কর্ণে অমৃত বর্ষণ করিত । কমলা নিরুপম সুন্দরী । র্তাহার নয়ন দুটি অতিশয় প্রশস্ত শান্তজ্যোতিঃ ঔ চিন্তাপ্রকাশক, সমস্ত মুখখানি শাস্ত ও গাঢ় চিস্তায় স্নান। দেহ অতি সুকুমার, বিধবার মলিন বস্ত্রে সে সুকুমার দেহ আবৃত হইয় শৈবাল-বেষ্টিত পাবৎ শোভা পাইত ; কিন্তু সে প্রস্ফুটিত পদ্ম নহে,~ সায়ংকালে মুদিতপ্রার পদ্ম যেরূপ জলহিল্লোলে ঈষৎ কম্পিত হইতে থাকে, সন্ধ্যার স্নিগ্ধ ছারাতে যেরূপ ধ্যাননিমগ্নের ন্যায় দেখায়, এই কোমলাঙ্গী তপস্বিনী সেইরূপ সততই চিত্তার মগ্ন, লোকালয়ে সেইরূপ মুদিতপ্রায় হইয়া থাকিতেন। কমলা চন্দ্রশেখরকে পিতা বলিয়া ডাকিতেন, চন্দ্রশেখরের গৃহকাৰ্য্য সমস্ত তিনিই নিৰ্ব্বাহ করিতেন—কার্য্যে অবসর পাইলেই আবার সেই নিভৃত, নিবিড় পাদপাবৃত স্থানে ঘাইতেন ; শিখণ্ডিবাহন