পাতা:বঙ্গসাহিত্যে নারী.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বঙ্গসাহি৩্যে নারী

 ক্রমশ মাসিকপত্রের পৃষ্ঠাতেও বঙ্গমহিলারা আত্মপ্রকাশ করিতে লাগিলেন। ‘বামাবোধিনী পত্রিকা’ বামাগণের রচনার জন্য পত্রিকার কয়েক পৃষ্ঠা উন্মুক্ত রাখিবার ব্যবস্থা করিলেন। চারি দিকেই স্ত্রীশিক্ষা প্রসারের আন্দোলন মাথা তুলিল। ১৮৬৯ খ্রীস্টাব্দে সরকার বেথুন কলেজের সহিত একটি শিক্ষয়িত্রী-বিদ্যালয়ের সূচনা করিলেন; কলিকাতার ব্রাহ্মসমাজগুলিও, বিশেষত কেশবচন্দ্রের প্রগতিশীল দল, স্ত্রীশিক্ষার সবাঙ্গীণ উন্নতিসাধনের জন্য বদ্ধপরিকর হইলেন। স্ত্রীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা প্রতিপন্ন করিবার জন্য নানা প্রবন্ধ ও পুস্তক-পুস্তিকা প্রচারিত হইতে লাগিল। যে-সকল মহিলা ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ে শিক্ষাপ্রাপ্ত হইয়াছেন, তাঁহারাও অশিক্ষিতা ভগ্নীগণকে বিদ্যাশিক্ষায় অন্যপ্রাণিত করিতে লাগিলেন। স্ত্রীশিক্ষার প্রসারের সহিত পরবর্তী দশ-এগার বৎসরে সাহিত্য-মন্দিরের পূজারিণীর সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পাইয়াছিল। তাঁহাদের দান কেবলমাত্র সাহিত্যের কাব্য-বিভাগেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ইহাদের সকলের নামধাম ও রচনার দীর্ঘ তালিকা না দিয়া মাত্র কয়েকজনের উল্লেখ করিলেই চলিবে: তাঁহারা

নবীনকালী দেবী: ‘কামিনী কলঙ্ক’ (উপন্যাস) ..  এপ্রিল ১৮৭০।
হেমাঙ্গিনী: ‘মনোরমা’ (আখ্যায়িকা) ..  জুলাই ১৮৭৪।
সুরঙ্গিনী দেবী (প্রসন্নকুমার সবাধিকারীর পত্নী):
  ‘তারাচরিত’ (রাজস্থানীয় ইতিহাস-মূলক
  আখ্যায়িকা)
..  জানুয়ারি ১৮৭৫।
ফৈজুন্নিসা চৌধুরাণী: ‘রূপ-জালাল’
  (প্রণয়মলক আখ্যায়িকা)
..  ঢাকা ১৮৭৬।
রাসসুন্দরী (কিশোরীলাল সরকারের মাতা):
  ‘আমার জীবন’
..  ডিসেম্বর ১৮৭৬।[১]
  1. প্রথম সংস্করণের পুস্তকের এই প্রকাশকাল বেঙ্গল লাইব্রেরি-সংকলিত মুদ্রিত পুস্তকাদির তালিকা হইতে গহীত। স্মৃতিকথায় সন-তারিখের গণ্ডগোল হওয়া স্বাভাবিক; রাসসান্দরী লিখিয়াছেন: “১২১৬ সালে চৈত্র মাসে আমার জন্ম হইয়াছে, আর এই বহি ১২৭৫ সালে যখন প্রথম ছাপা হয়, তখন আমার বয়ঃক্রম ঊনষাইট বৎসর ছিল।”