পাতা:বঙ্গসাহিত্যে নারী.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
বঙ্গসাহিত্যে নারী

 গত শতাব্দীর সপ্তম দশক পর্যন্ত ইতিহাস সংক্ষিপ্ত। এই সময়ে বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে এমন এক প্রতিভাশালিনী মহিলা আবির্ভূত হইলেন যাঁহার গদ্য-পদ্যে আমরা সর্বপ্রথম শিল্পসুষমার আস্বাদ পাইলাম, যাঁহার হাতে বঙ্গভারতীর বীণায় মৌলিক নারী-সুর ঝংকৃত হইল; ইনি রবীন্দ্রনাথের অগ্রজা স্বর্ণকুমারী দেবী। প্রতিভার যাদুস্পর্শে সর্বপ্রথম ইঁহার রচনাই রসমণ্ডিত হইয়া সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। গল্প উপন্যাস, কবিতা গান, নাটক প্রবন্ধ ও বিজ্ঞান—এক কথায় সাহিত্যের সকল বিভাগেই তাঁহার দান স্বীকৃত হইতে থাকে। এই সাফল্যের প্রভাব অচিরাৎ পরিলক্ষিত হয়। এই সময় হইতে শতাব্দীর শেষ পাদ পর্যন্ত এমন কতকগুলি মহিলা-সাহিত্যিকের আবিভাব ঘটে, যাঁহারা বঙ্গসাহিত্যে বিশিষ্টতা অজন করেন। তাঁহাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও রচনাবলীর কালানুক্রমিক তালিকা দিতেছি:

 স্বর্ণকুমারী দেবী। আনুমানিক ১৮৫৫ খ্রীস্টাব্দে কলিকাতা জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরপরিবারে স্বর্ণকুমারী দেবীর জন্ম হয়। তিনি মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চতুর্থ কন্যা; রবীন্দ্রনাথের ভগিনী। ১৮৬৭ সনের ১৭ই নবেম্ববর ১৩ বৎসর বয়সে জানকীনাথ ঘোষালের সহিত তাঁহার বিবাহ হয়। স্বর্ণকুমারীর সুদীর্ঘ জীবন বাণী-সাধনায় সমুজ্জ্বল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি বঙ্গভারতীর সেবা করিয়া গিয়াছেন। সাহিত্যে তাঁহার দান সুবিপুল। বঙ্গমহিলাদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম সার্থক উপন্যাস, গাথা ও বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ রচনা করেন। তাঁহার রচিত গ্রন্থাবলী:

১ দীপ-নির্ব্বাণ (উপন্যাস): ১২৮৩ সাল (১৫-১২-১৮৭৬)। পৃ ৩২১।
২ বসন্ত উৎসব (গীতিনাট্য): ১৮০১ শক (৪-১১-১৮৭৯)। পৃ ৪০।
৩ ছিন্নমুকুল (উপন্যাস): (৪-১১-১৮৭৯)। পৃ ২৩৮।
৪ মালতী (উপন্যাস): ১২৮৬ সাল (২৫-৩-১৮৮০)। পৃ ৪৪।
৫ গাথা: ১২৮৭ সাল (২০-১২-১৮৮o)। পৃ ৯৫।
৬ পৃথিবী (বৈজ্ঞানিক পুস্তক): আশ্বিন ১২৮৯ ২ে৭-৯-১৮৮২)। পৃ ১৮৪।