পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, পঞ্চমাংশ, উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, তৃতীয় খণ্ড).djvu/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮৮ বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়

। তত্ত্ব্যক্তিচাতুৰ্য্যবলেন রাজা শ্ৰীমদগণেশে বরদস্থারূপান । গৌড়স্ত পলান, যবনাত্মজান হি জিত্ব চ গৌড়েশ্বরতামবাপ | ৫১ গ্রহপক্ষাক্ষিশশধৃতিমিতে শাকে মুবুদ্ধিমান । গণেশে যবনং জিত্ব গেীড়ৈকচ্ছত্রবৃগতৃৎ । ৫২ " + অর্থাৎ মহাত্মা নৃসিংহের প্রস্ফুটিত যশঃপ্রসূণসৌরভ গুণে বহুশাস্ত্ৰদশী রাজা গণেশ মুগ্ধ হইয়াছিলেন। সেই রাজা সদ্বংশশৈলের দ্বিজরাজ অর্থাৎ চক্সের সমান ছিলেন। তিনি বেদজ্ঞ ও সদ্বিপ্রগণের আশ্রয়, দুষ্টের শাস্তা, সাধুজনপালক, দাতা, গুণজ্ঞ ও হরিভক্তগণের চূড়ামণি ছিলেন। তিনি বহুনীতিজ্ঞ নৃসিংহের নিকট দূত পঠাইয়া বহুসভ্যযুক্ত দিনাজপুর নামক রাজধানীতে আনাইয়া তাহাকে মন্ত্রিত্ব অর্পণ করিয়াছিলেন । সেই নৃসিংহের যুক্তিচাতুর্য্যবলে তিনি গৌড়ের মুসলমান রাজগণকে জয় করিয়া গৌড়েশ্বর হইয়াছিলেন । সুবুদ্ধিমান, গণেশ ৩২৯ শাকে যবনকে জয় করিয়া গৌড়ের একচ্ছত্র অধিপতি হইয়াছিলেন । ঈশান নাগরের অদ্বৈতপ্রকাশ গ্রন্থে লিখিত আছে,— “যেই নরসিংহ নাড়িয়াল বলি খ্যাত । সিদ্ধশ্রোত্রিয়াখ্য অরু ওঝার বংশজাত ॥ যেই নরসিংহ যশ ঘোষে ত্রিভুবন । সৰ্ব্বশাস্ত্রে সুপণ্ডিত অতি বিচক্ষণ ॥ যাহার মন্ত্রণাবলে শ্ৰীগণেশ রাজা ! গৌড়ের বাদশাহ মারি গৌড়ের হৈল রাজ ৷ যার কন্যা বিবাহে হয় কাপের উৎপত্তি । লাউর প্রদেশে হয় যাহার বসতি ॥” উপরোক্ত দুই প্রাচীন গ্রন্থের প্রমাণে নরসিংহ নাড়িয়ালের সময়ে ১৩২৯ শকে বা ১৪০৭ খৃষ্টাব্দে রাজা গণেশ কর্তৃক গৌড়াধিকারের প্রসঙ্গ পাওয়া মাইতেছে । বাল্যলীলাস্থত্রে ১৩২৯ শক বা ১৪০৭ খৃষ্টাব্দে রাজ গণেশের সমস্ত গৌড়বঙ্গের একচ্ছত্র অধিপতি হইবার কথা বর্ণিত হইলেও মুসলমান গোঁড়াধিপগণের মুদ্র হইতে জানা যায়, ৮১২ হিজরী বা ১৪০৯ খৃষ্টাব্দ পৰ্য্যন্ত গিয়াসুদ্দীন আজমশাহ জীবিত ছিলেন । তৎপরবর্ষের মুদ্রা আলোচনা করিলে মনে হয়, গিয়াসুদ্দীন আজমশাহের পর তৎপুত্ৰ শৈফ উদ্দীন হামজশাহ, তৎপরে সিহাবুদিন বয়াজিদ শাহ এবং অবশেষে তৎপুত্র আলাউদ্দীন ফিরোজশাহ রাজা হুইয়াছিলেন । রিয়াজ-উস্-সলার্তানে লিখিত হুইয়াছে, রাজা গণেশের কৌশলে গিয়াসুদ্দীন আজমশাহ নিহত হইলে তিনি রাজ্যের একপ্রকার সর্বময় কৰ্ত্তা হুইয়া পড়িয়ছিলেন। আমাদের মনে হয়, যদিও আজিমশাহ ও তাহার বংশধরগণের নাম মুসলমান মুদ্রায় পাওয়া যাইতেছে, প্রকৃত প্রস্তাবে তাহার রাজা গণেশের হস্তে ক্রীড়াপুত্তলিক মাত্র ছিলেন। আজমশাহের মুদ্রা হইতে জানিতে পারি, ত্ত্বিনি ৭৯৫ হইতে ৮১৩ হিজরী পর্য্যন্ত অর্থাৎ ১৩৯২ হইতে ১৪১০ খৃষ্টাব্দ পৰ্য্যন্ত সপ্তদশপর্ষের উপর (নামমাত্র)রাজত্ব করিয়া গিয়াছেন। এরূপস্থলে মনে হয় ১৩৯২ হইতে আজমশাহের রাজ্যভিষেকের সহিত রাজা গণেশের অভ্যুদয় ও পরাক্রম বিস্তৃত হইয়াছিল ।শ্রী বাল্যলীলাসূত্র,১ম সর্গ,শ্রী অত্যুৎচরণ চৌধুরী সম্পাদিত,১১ পৃষ্ঠা