পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, পঞ্চমাংশ, উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২ বঙ্গের জাতীক্স ইতিহাস ১ম অধ্যায় । অর্থাৎ বেলুনে আদি বাস হইলেও মেহগ্রামেই প্রথম সভা আহত হইয়াছিল ও তৎপরে বেলুনে সভা হয়। পূৰ্বেই লিখিয়াছি বেদগৰ্ভ চৌধুরী দিল্লার বাদশাহের দরবারে উচ্চপদে কাৰ্য্য করিতেন। তিনি বহু সম্পত্তি অর্জন করিয়াছিলেন। তাহার সম্বন্ধে নানাপ্রকার প্রবাদ প্রচলিত রঙ্গিয়াছে। একদা তাহার একটা বিশ্বস্ত কৰ্ম্মচারীকে একটা হাতী ক্রয় করিবার জন্ত দূর দেশে পাঠাইয়াছিলেন। যথাকালে উক্ত হাতী দান করিবার উদেখ ছিল। কৰ্ম্মচারীট নির্দিষ্ট সময়ে মেছগ্রামের বাটতে পৌছিতে পারেন নাই। এদিকে কাল গত হয় দেখিয়া পথিমধ্যে জনৈক ব্রাহ্মণকে হস্তীট দান করিয়া মেহগ্রামের বাড়ীতে ফিরিয়া আসিলে বেদগৰ্ভ তাহার মুখে যথাসময়ে হস্তিদানের সম্বাদ অবগত হইয়া আহলাদত হইলেন ও উক্ত কৰ্ম্মচারীকে “বিশ্বাস"উপাধি সহ বহু অর্থ দান করেন এবং স্বীয় বাড়ীর নিকটে একটা বৃহং পুষ্করিণী খনন করাইয়। উক্ত কৰ্ম্মচারীর উপাধির স্মরণ জন্ত তাহার নাম বিশ্বাস-পুষ্করিণী রা. হয়। সোণারকুণ্ডের দামবিশ্বাসগণ উক্ত কৰ্ম্মচারীর বংশধর । বেদগর্ভের বংশে নবকান্ত চৌধুরী নশীপুরের রাজা উদমন্ত সিংহেরও তাহার পরলোকগমনের পর তাহার বংশধরের পক্ষে দেওয়ানের কৰ্ম্ম করিয়া অবস্থার উন্নতি করেন। তিনি অনেক জমিদারী ও পত্নী সম্পত্তি করিয়াছিলেন। তাছার পুত্র রামচন্দ্র চৌধুরীর বিবাহ বালিয়ার রঘুনাথবংশে রায় পূর্ণেদুনারায়ণ সিংহ বাহাদুরের পিতামহের ভগিনীর সহিত হইয়াছিল। রামচন্দ্র অপুত্রক অবস্থায় পরলোকগমন করিলে তাঙ্কার পত্নী মধুসুদনকে দত্তক পুত্র গ্রহণ করেন। মধুসুদন পরোপকারী ছিলেন। অন্নদান তাহার প্রধান ব্রত ছিল। একবার দেশে দুর্ভিক্ষ হইলে মধুসূদন স্বয়ং কয়েক সহস্র মুদ্র ঋণ করিয়া দেশের বহু লোককে ঋণ দান করিয়াছিলেন । তাহার নিকট হইতে যাহারা ঋণ গ্রহণ করিয়াছিলেন, তাহাদের অধিকাংশই ব্রাহ্মণ ছিলেন। মধুস্তদন তাঙ্গদের নিকট হইতে টাকা আদায় করিতে পারিলেন না। এদিকে মুদ বৃদ্ধি হইয়। লক্ষাধিক টাকার জন্য মধুসুদনকে দায়ী হইতে ইল। অবশেষে ঋণদায়ে সৰ্ব্বস্বাস্ত হইতে হয়। মধুসূদন এই মনঃপীড়া সহ করিতে ন পারিয়া সম্পত্তি নীলাম হুবার এক মাস পরে অকস্মাৎ সন্ন্যাস রোপে পরলোকগমন করেন । তাহার বংশধরগণ এক্ষণে বহু কষ্ট্রে দিনপাত করিতেছেন । নবকাস্তের পিতৃব্য লক্ষ্মীকাস্তের পৌত্র ধনঞ্জঃ নবকান্তের নিকট নশীপরাজ এষ্ট্রেটে কাৰ্য্য করিতেন। পরে তিনি উন্নতি করিয়া অনেক জমিদারী ও পত্নী সম্পত্তি করিয়াছিলেন এবং পৃথকৃরূপে দেবসেবা ও দুর্গোৎসব প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। তাহার বংশধরগণ উক্ত সম্পত্তির অধিকাংশই নষ্ট করিয়াছেন।