পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, পঞ্চমাংশ, উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বামিত্ৰগোত্র মিত্রবংশ । ] উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থকাণ্ড 8ጳ লক্ষ আদায় করিলেন। সম্রাট, এজন্ত দর্পনারায়ণের প্রতি বিশেষ সস্তুষ্ট হইলেন। মুর্শিদকুলিখা পূৰ্ব্ব হইতেই দর্পনারায়ণের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করিতেছিলেন, কিন্তু তাহার কাৰ্য্যকুশলত, বুদ্ধিমত্ত ও সাহস বাদশাহের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে জানিতে পারির উপহার সৰ্ব্বনাশের জন্ত কুটজাল বিস্তার করিতে লাগলেন। বাদশাহনিয়োজিত উচ্চশ্রেণীর কৰ্ম্মচারী মুবাদারের ক্ষমতার সম্পূর্ণ বহির্ভূত। কোনরূপ দোষ প্রদর্শন না করিয়া এরূপ ব্যক্তিকে বিনাশ করা নিরাপদ নহে জানিয়া মুর্শিদকুলিখা এক নূতন উপায় উদ্ভাবন করিলেন। রাজস্ব সম্বন্ধে দোষ দেখানই উৎকৃষ্ট উপায় বলিয়া স্থির করিলেন। খালস। দেওয়ান ভূপতি রায়ের মৃত্যু হইলে তাহার পুত্র গোলাপ রায় রাজস্ব কাৰ্য্যে অনভিজ্ঞ বলিয়৷ মুর্শিদকুলিখী দপনারায়ণকে উক্ত পদ গ্রহণ নিমিত্ত অনুরোধ করিলেন। দর্পনারায়ণ নিঃসঙ্কোচে তাহ গ্রহণ করিলেন ও আয় বৃদ্ধির জন্ত যত্ন করিতে লাগিলেন । এই সময় নানকর বন্ধ হওয়ায় কেহ কেহ তাহার প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়াছিলেন। মুর্শিদকুলিখা এই উপযুক্ত অবসর বিবেচনা করিয়া তহবিল তছরূপ অছিলায় দপনারায়ণকে কারারুদ্ধ করিলেন । তথায় আহার না দেওয়ায় দপনারায়ণের মৃত্যু ঘটে। রিয়াজ-উস-সালাতিন বলেন, সৰ্ব্বপ্রকার শারীরিক সুখ হইতে বঞ্চিত করায় ক্রমশঃ স্বাস্থ্যভঙ্গ হইয় তাহার মৃত্যু হয়। দর্পনারায়ণের মৃত্যুর পর তাহার পুত্র শিবনারায়ণ কানুনগো পদ ও রসুমের দশ আন অংশ লাভ করিয়াছিলেন । তিনি দীর্ঘকাল সুখ্যাতির সহিত কাৰ্য্য করিয়াছিলেন । হিজরি সন ১৯৪৭ অব্দে ইং ১৭২৪ খৃষ্টাব্দে বাদশাহ মহম্মদ শার রাজত্বের সপ্তমবর্ষে শিবনারায়ণ কানুনগো সনন্দ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন । শিবনারায়ণের কীৰ্ত্তি – ১ম—তাহার ধাত্রীর নামে চম্পাসাগর পুষ্করিণী ও চম্প-বাগান। ২য়-পদ্মপুষ্করিণী নামে বৃহৎ জলাশয়। ৩য়—দীপান্বিত অমাবস্ত উপলক্ষে তাহার অধিকারভুক্ত পরগণে সেরসাবাদ ( জেলা যালদহ), পরগণে রুকুনপুর (জেলা মুর্শিদাবাদ ) ; পরগণে ভুলুয়া ও পরগণে সন্দ্বীপ ( জেলা নোয়াখালি) এবং ঢাকা পাবনা প্রভৃতি জেলায় প্রত্যেক মৌজায় কালী প্রতিমা করিয়া পূজার ব্যবস্থা ও উক্ত পূজা নিৰ্ব্বাহ জষ্ঠ বার্ষিক একলক্ষ টাকা আয়ের সম্পত্তি অৰ্পণ । শিবনারায়ণের পরে তাহার পুত্র লক্ষ্মীনারায়ণ রায় মহাশয় দিল্লীর বাদশাহ দ্বিতীয় আলমগীরের সময় পিতৃপদ প্রাপ্ত হইয়া বাঙ্গালার সর্বপ্রধান কানুনগো বা বঙ্গাধিকারী পদে কাৰ্য্য করিয়াছিলেন । র্তাহার প্রধান কীৰ্ত্তি একবার তিনি র্তাহার অধিকৃত মুঘল সমূহের প্রত্যেক মৌজায় ১০টি করিয়া ব্রাহ্মণ ভোজন করাইয়াছিলেন এইরূপে একদিনে লক্ষাধিক ব্রাহ্মণ ভোজন করান হইয়াছিল। ঐ ব্রাহ্মণ ভোজন যাহাতে প্রতি বৎসর নির্বাহ হয় তজ্জন্ত মোট বার্ষিক একলক্ষ পচিশ হাজার টাকা আয়ের সম্পত্তি নির্দেশ করিয়া দিয়াছিলেন । ডাহাপাড়ার রাজবাড়ীতে লক্ষ ব্রাহ্মণের পদধূলি বহুদিন রক্ষিত ছিল। তৎকালে আলিবর্দি খী বাজলার স্বৰাক্ষার ছিলেন। পলাশীর যুদ্ধকালে লক্ষ্মীনারায়ণ দিল্লীতে ছিলেন। উক্ত