পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, পঞ্চমাংশ, উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, তৃতীয় খণ্ড).djvu/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sరీg বঙ্গের জাতীক্স ইতিহাস [ ৯ম অধ্যায় দত্তবংশের অদ্বিতীয় গৌরব প্রেমভক্তির অপূৰ্ব্ব অবতার নরোত্তম ঠাকুর মহাশয় নিজ অসাধারণ চরিত্রমাহাষ্ম্যে গৌড়দেশ ধষ্ঠ করিয়া গিয়াছেন। এই মহাপুরুষের বিস্তৃত ইতিহাস এই বংশবিবরণ মধ্যে অসম্ভব। তথাপি ভক্তিরত্নাকর, প্রেমবিলাস ও নরোত্তমবিলাস হইতে র্তাহার চরিতকথা ৮তি সংক্ষেপে কীৰ্ত্তিত হইতেছে— “কিবা মাঘ পূর্ণিমা দিবস দও ছয় । সৰ্ব্ব সুলক্ষণ হৈল প্রকট সময় ॥” (নরোত্তমবিলাস ) নরোত্তমের জন্ম তারিখ ঠিক জানা যায় না ; তবে তখনও শ্রীচৈতন্ত মহাপ্ৰভু ধরাধামে প্রকট আছেন, মুতরাং প্রায় ১.৫৩ কি ৫৪ শকাব ( ১৫৩১ কি ১৫৩২ খৃষ্টাব্দ) হইবে। নরোত্তম বাল্যকাল হইতেই অতি মধুর প্রকৃতি ছিলেন । র্তাহার চরিত্রগুণে ও মুমুধুর ব্যবহারে সকলেই আকৃষ্ট হইত। একদা কৃষ্ণদাস নামক জনৈক ব্রাহ্মণের মুখে শ্ৰীগৌরাঙ্গ প্রসঙ্গ শ্রবণ করিয়া তিনি বড়ই ব্যাকুল হইয়া পড়িলেন। যতই দিন যাইতে লাগিল, তিনি গৌরাঙ্গপ্রেমে উন্মত্ত হইয়া উঠিতে লাগিলেন। পরে যখন শুনিলেন যে শ্ৰীগৌরঙ্গদেব অপ্রকট হইয়াছেন তখন র্তাহীর মূছৰ্গর উপক্রম হইল। মহাপ্রভুর অন্তৰ্দ্ধানে তাহার পার্ষদগণ শ্ৰীবৃন্দাবনধামে গিয়া বাস করেন, নরোত্তমও বৃন্দাবন যাইবার জন্ত অধীর হইলেন। র্তাহার এই ভাব দর্শন করিয়া পিতামাত অতিশয় চিন্তিত হইলেন। একদিন নরোত্তম পদ্মায় একাকী স্নান করিতে গিয়াছিলেন। বহুক্ষণ অতীত হইল তথাপি তিনি গৃহে ফিরিলেন না। তখন তাহার অনুসন্ধানে চারিদিকে লোক ছুটিল, এমন কি তাহার মাত। রাণী নারায়ণীও র্কাদিতে কঁাদিতে নদীতীরে গিয়া উপস্থিত । তাহারা দেখিতে পাইলেন বালক নরোত্তম ভাববিহবল হইয়া নদীতীরে নৃত্য করিতেছেন। সকলে বালককে গৃহে লইয়া আসিলেন। প্রেমবিলাসগ্রন্থে এই ঘনার একটা পূৰ্ব্ব কারণ লিখিত আছে, তাহ! এই—একদা মহাপ্রভু রামকেলি গ্রামে পদ্মাতীরে দণ্ডায়মান হইয়া কৃষ্ণাবেশে নিরো - ম নরোত্তম’ বলিয়। ডাকিয়াছিলেন, তাহতেই নরোত্তমের জন্ম । মহা প্ৰভু নরোভমের জন্ত প্রেমধন পদ্মাবতীর নিকট গচ্ছিত রাখিয় ছিলেন । তিনি স্বপ্নাদেশ দিয়া নরোত্তমকে পদ্মাবর্তীতে স্নানার্থ প্রেরণ করেন ও তাঁহাকে গচ্ছিত প্রেমধনের অধিকারী করেন। নরোত্তম বৃন্দাবন গমনে বড়ই অগ্রহ প্রকাশ করিতে লাগিলেন, কিন্তু মাতা পিতা তাহাকে বাধা দিলেন। কিছুদিন পরে তাহার সুযোগ উপস্থিত হইল। তাহার গুণ শ্রবণ করিয়া জায়গীরদার তাহাকে আনাইয়া দেখিবার জন্ত লোক পঠাইলেন । তিনি প্রেরিত লোক সহ গৃহ হইতে বহির্গত হইলেন। পথিমধ্যে গতি পরিবর্তন করিয়া বৃন্দাবন অভিমুখে পলায়ন করিলেন । সংবাদ পাইয়া রাজা কৃষ্ণানন্দ তাহাকে ধরিতে লোক পাঠাইলেন, কিন্তু নরোত্তম কিছুতেই আর রছিলেন না।

  • বৃন্দাবনে গিয়া তিনি শ্রীজীবগোস্বামীর পদপ্রান্তে উপস্থিত হইলেন। লোকনাথ গোস্বানীকে দেখিয়াই তাঁহাকে তিনি মনঃ প্রাণ সমর্পণ করিলেন ও তাঁহার নিকট দীক্ষা গ্রহণে