পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, পঞ্চমাংশ, উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, তৃতীয় খণ্ড).djvu/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গের জাতীক্স ইতিহাস ৯ম অধ্যায় । טאקאס\ শ্ৰীনিবাস এবং রাষচন্দ্র কবিরাজ এই উৎসবে আগমন করিয়াছিলেন। রামচঞ্জের সহিত নরোত্তমের প্রগাঢ় প্রণয় জন্মিল, তিনি খেতরীতেই রহিয়া গেলেন। এই সময়ে বলরাম মিশ্র, রামকৃষ্ণ আচাৰ্য্য, হরিরাম আচাৰ্য্য প্রভৃতি ব্ৰাহ্মণগণ ঠাকুর মহাশয়ের শিষ্য হইলেন। ইহাতে ব্রাহ্মণগণ মহা বিচলিত হইয়। মিথিলার দিগ্বিজয়ী পণ্ডিত মুরারিকে আনাইলেন। বিচারে মুরারি পরাজিত হইলেন। পূৰ্ব্বেই নরোত্তমের পিতৃব্য মহামাত্য পুরুষোত্তমের মৃত্যু হইয়াছিল। ঠাকুর মহাশয় বিষয়বিরক্ত বলিয় রাজা কৃষ্ণাননাও ভ্রাতৃপুত্র সন্তোষদত্তকে রাজ্যাধিকার দিয়া যান। •রাজা সন্তোষদ ও ঠাকুর মহাশয়ের শিষ্য হইয় তাহার সেবার ভার নিজে গ্রহণ করেন । অল্প দিন পরে গাম্ভিলানিবাসী পণ্ডিত ব্রাহ্মণ গঙ্গানারায়ণ চক্রবর্তী নরোত্তমের শিষ্যত্ব গ্রহণ করিলেন। তখন ব্রাহ্মণগণ রাজা নগ্নসিংহের শরণাপন্ন হন। যাহা হউক, রামচন্দ্র কবিরাজ ও গঙ্গানারায়ণ স্লাজপ্রেরিত পণ্ডিতব্যুহকে পরাস্ত করিলেন । রাজা নরসিংহ সস্ত্রীক ঠাকুর নরোওমের শিষ্য হইলেন । পরে গোঁড়াধিরাজের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজা চাদরায়ও তাহার শিষ্যত্ব গ্রহণ করিয়াছিলেন । কিছুদিন পরে শ্ৰীনিবাসাচার্ধ্যের আহবানে রামচন্দ্র বৃন্দাবনে গমন করেন। রামচন্দ্র অরি ফিরিয়া আসেন নাই । এই সময়ে প্রিয় সঙ্গীর বিরহে ঠাকুর মহাশয় নিতান্ত কাতর হইয়া পড়িয়া ছিলেন । দিবারাত্র ‘প্রেমস্থলী’ নামক ভজন স্থানে গিয়া পড়িয়া থাকিতেন, কাহারও সহিত বাক্যালাপ করিতেন না । আচাৰ্য্য ও রামচন্দ্রের বিয়োগের পর তাহার যে ভাব হইয়াছিল, তাহ রাধিকাবিরহভাব-সাধকের শেষ অবস্থা। তিনি বুঝিলেন, বিরহব্যথায় তিনি আর দেহ ধারণ করিতে পারিতেছেন না। শিষ্যগণকে ডাকিয়া বিগ্ৰহ গুলি দান করিলেন। তখন একবার প্রিয় রামচন্দ্রের আলয় বুধুীতে গমন করিলেন ও রামচন্দ্রের অমুজ পদকর্তা গোবিন্দদাসের পদাবলী শুনিলেন । পরদিন বুধুী হইতে গাম্ভিলা গ্রামে প্রিয় শিষ্য গঙ্গানারায়ণ চক্ৰবৰ্ত্তীর গৃহে গমন করিলেন। এখানে কয়েক দিবস অবস্থান করিয়া কীৰ্ত্তিক মাসের কৃষ্ণপঞ্চমী তিথিতে ঠাকুর মহাশয় গঙ্গাতীর্থে দেহ রক্ষা করেন। সে কাহিনী অত্যাশ্চৰ্য্য। ঠাকুর মহাশয় কয়েক দিন পীড়িত, শিষ্যগণ র্তাহাকে ঘাটে লইয়া গিয়াছেন, আস্তে আস্তে র্তাহাঁর গাত্র মার্জন করিতেছেন । "দেহে কিবা মার্জন করিবে পরশিতে । দুগ্ধ প্রায় মিলাইলা গঙ্গার জলেতে। 拳 দেখিতে দেখিতে শীঘ্ৰ হৈল অন্তৰ নি । অত্যন্ত ছজ্ঞেয় ইহা কে বুঝিবে আন ॥ অকস্মাৎ জায় তরঙ্গ উঠিল । $ দেখিয়া লোকের মহা বিস্ময় হইল।” (নরোত্তমবিলাস ) এইরূপে শ্ৰীল নরোত্তম ঠাকুর মহাশয় গঙ্গার কোলে অপ্রকট হইলেন, কায়স্থ জগতের একটা সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ জ্যোতিক চিরতরে অস্তমিত হইলেন ।