পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, প্রথমাংশ, রাজন্য কাণ্ড).djvu/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুচনা ৩ তাহাদের ঔদাসীন্ত বা আলস্ত আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। এক সময়ে ষে সকল প্রথিত ংশের কুলগৌরব সমাজে বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল, শেষোক্ত কারণে র্তাহাদের ংশধরগণ পূৰ্ব্বগৌরবের নিদর্শন পূর্ববংশামুচরিত ও বংশক্রম হারাইয়া সমাজে ক্রমশঃ খৰ্ব্বতালাভ করিয়াছেন, কোথাও বা অজ্ঞাতকুলশীল বলিয়া সমাজে অবজ্ঞাত হইয়াছেন। স্বতরাং বুঝিজে হইবে যে, বংশক্রম রক্ষাই আৰ্যসমাজের বিশেষত্ব বা আর্য্যত্ব। যে বংশে বা পরিবারে যত অধিক কুলক্রম বা বংশামুচরিত রক্ষিত হইয়াছে, তাহারা জাৰ্য্যসমাজে এক সময়ে তত অধিক সন্মানিত ও উন্নত ছিলেন বলিয়া প্রতিভাত হয়। . . তাই সকল প্রাচীন জাৰ্য্যশাস্ত্র হইতে স্থিরীকৃত হইতেছে যে, বংশক্রম রক্ষা আৰ্য-g সমাজের বিশেষত্ব। র্যাহারা বংশক্রম-রক্ষার আবহমান কাল উদাসীন, যে সমাজে কোন: ব্যক্তি ধারাবাহিক কুলপরিচয় দিতে অক্ষম, যাহাদের মধ্যে কোন কালে কুলপরিচাr. রক্ষা বা কুলকীৰ্ত্তি-ঘোষণা করিবার জন্য উপযুক্ত কুলজ্ঞ বা কুলাচাৰ্য্য নিযুক্ত স্থান মাই;" সেই সমাজ কখনই প্রকৃত আৰ্য্যসমাজ নহে, তাহাই প্রকৃত শূদ্ৰ ৰ অনাৰ্য্য-সমাজ বন্ধিয়া পরিগণিত । বর্তমান বৈজ্ঞানিক ও মানবতত্ত্ববিদগণের মধ্যে বঙ্গীয় আৰ্য্যসমাজ সম্বন্ধে বিবিধ যুক্তি ও মতবাদ উপস্থিত হইয়াছে। পাশ্চাত্যগণের মধ্যে অনেকেই বলিতে প্রস্তুত যে, গৌড়বঙ্গের অভিজাতগণ বহুদিন হইতে আর্য্যশোণিত-সম্বন্ধ-বিচ্যুত হইয়াছেন, তাহারা এখন ভ্রাবিড়ীয় শোণিত সংস্রবে দ্রাবিড় জাতির একতম শাখা-বলিয়া গণ্য। আবার কেহ কেই বলিতে চাহেন যে, প্রাচ্য অর্থাৎ গোড়-বঙ্গবাসীর আর্য্যত্বের দাবা করিবার কিছুই নাই। এমন কি, কোন কোন মহাত্মা মাপ-কাটা দিয়া মাপিয়া জুখিয়া বলিতে চান যে, বর্তমান বঙ্গবাসিগণ অভিজাত ঋষি বা আৰ্য্যবংশধর বলিয়া পরিচয় দিবার চেষ্টা করিলেও প্রকৃত প্রস্তাবে তাহারা মোঙ্গলীয়দ্রাবিড়ায় অথবা দ্রাবিড়-লোহিত্য বংশসস্তুত । বাস্তবিক কি তাই ? আমরা বহুদিন হইতে দেখিয়া আসিতেছি যে, পশ্চিম-ভারত হইতেই আৰ্য্য-সভ্যতা প্রাচ্য-ভূমে প্রসারিত হইয়াছে। বেদ তাহার সাক্ষ্য দিতেছে, রামায়ণ, মহাভারত ও পুরাণাদিতে তাহার দৃষ্টান্ত রহিয়াছে, পালা ও প্রাঙ্কত ভাষায় রচিত জৈন ও বৌদ্ধ প্রাচীন গ্রন্থসমূহে তাহার ভুরি ভুরি আখ্যায়িকা বিবৃত হইয়াছে। স্বপ্রাচীন শিলালিপি ও তাম্রশাসনসমূহও তাহার সাক্ষাদান করিতেছে । অতি প্রাচীনতম কাল হইতে ষে রেখাপাত ঘটিয়াছে, পরবত্তিকালে ক্রমশঃই তাহার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাইয়াছে। সুতরাং কিরূপে বলিব যে, আর্য্য-বুদবুদ দ্রাবিড়-সমুদ্রে বিলীন হইয়াছে। কেবন্ধ পূৰ্ব্বোক্ত সংস্কৃত ও পালি গ্রন্থ এবং লেখাদি বলিয়া নহে, অধুনাতন বঙ্গের অভিজাতংশগণের পূর্বকুলপরিচায়ক কুলশাস্ত্রসমূহেও আর্য্যসভ্যতার লীলাস্থলী পশ্চিমভারত হইতেই তাহাদের বীজপুরুষগণের গোঁড়াগমন স্থিরাঙ্কত হইয়াছে। কে কোথা হইতে আসিলেন, কিরূপে র্তাহার গোঁড়বাসী হইলেন, কি জন্ত তাহার রাজসন্মান লাভ করিলেন,