পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, প্রথমাংশ, রাজন্য কাণ্ড).djvu/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কএকটী বক্তব্য কায়স্থ-কাণ্ডের প্রথমাংশ রাজন্তকাও প্রকাশিত হইৰু, এই অংশের নাম কেন রাজন্তকীও রাখা হইল, তাহ স্বচনায় লিখিয়াছি। এই রাজন্তকাণ্ডে অতিপূৰ্ব্বকাল হইতে গৌড়বঙ্গে মুসলমান-অধিকার-বিস্তার-কাল অবধি হিন্দু রাজত্বের ইতিহাস সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করিবার চেষ্টা করিয়াছি। ত্রিংশদ্ববর্ষাধিককাল গৌড়বঙ্গের পুরাতত্ত্ব আলোচনা করিয়া যাহা বুঝিয়াছি, তাহাই এই ক্ষুদ্র পুস্তকে অতি সংক্ষেপে গ্রথিত হইয়াছে । পুরাতত্ত্ব-আলোচনা আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য হইলেও বিশ্বকোষের সমাপ্তিকাল পর্য্যন্ত এ বিষয়ে সমাক্-রূপে মনোযোগ দিবীর অবকাশ ঘটে নাই । ১৩১৮ সালে বিশ্বকোষ ব্রত উদযাপন করিয়া, আমার চিরদিনের সঙ্কল্পসাধনের পথে ক্রমশঃ অগ্রসর হইতেছি । সুখের বিষয় এ কয় বর্ষ বঙ্গের নানা-কেন্দ্রে পুরাতত্ত্বআলোচনার যথেষ্ট প্রসারবৃদ্ধি হইয়াছে। প্রত্নতত্ত্বানুসন্ধিৎসুর গবেষণায় কতকগুলি তাম্রশাসনআবিষ্কারের সঙ্গে তিমিরাবৃত অনেক ঐতিহাসিকতত্ত্ব উদঘাটিত হইয়াছে ; বহু দিন হইতে এসিয়াটিক-সোসাইটর পত্রিকায় এবং নানা মাসিক ও ত্রৈমাসিক পত্রিকায় বাঙ্গালার পুরাতত্ত্ব সম্বন্ধে পূৰ্ব্বে যে সকল আলোচনা করিয়াছি, এ কয় বর্ষ বহু শিলালেখ, তাম্রলেখ, কুলুগ্ৰন্থ ও সাময়িক ইতিহাস-আলোচনার ফলে সেই সকল আস্কোপাস্ত পুনবিচার করিবার সুযোগ উপস্থিত হইয়াছে। এ কয় বর্ষের পুনরালোচনায় অনেক নূতন আলোক লাভ করিয়াছি, তাহার সাহায্যে স্থানে স্থানে আমার পূর্ব-মতের কিছু কিছু পরিবর্তন ও পরিবদ্ধন আবগুক মনে হইয়াছে। এই কারণে আলোচ্য রাজন্তকাণ্ডে কোন কোন স্থলে আমার পুৰ্ব্ব মতের পরিবর্তন দেখিতে পাইবেন । “ভবতি বিজ্ঞতমঃ ক্রমশো জনঃ” এই সদুক্তির উপর নির্ভর করিয়া আমার পূৰ্ব্বক্রট স্বীকার করিতেছি এবং আমার পুৰ্ব্ব সিদ্ধান্তের সহিত আলোচ্য গ্রন্থের যেখানে যেখানে বিরোধ লক্ষিত হইবে, সেই সেই স্থলে পুৰ্ব্ব সিদ্ধান্ত পরিত্যাগ করিয়া বর্তমান রাজন্তকাণ্ডে যাহা লিখিত হইল, তাছাই আমার বর্তমান সিদ্ধান্ত বলিয়া গ্রহণ করিবার জন্তু পাঠকবর্গকে অনুরোধ করি । এ ছাড়া এখানে কএকটী বিশেষ ভ্রম সংশোধন করা ও কোন কোন বিষয়ে সামান্ত আলোচনা করা কর্তব্য মনে করিতেছি -- ৪১ পৃষ্ঠায় বঙ্গাধিপ ধৰ্ম্মাদিত্য, গোপচন্দ্র ও সমাচারদেবকে বিভিন্ন বংশীয় বলিয়া মনে করিয়া ছিলাম, কিন্তু তাহদের তাম্রলেখ-চতুষ্টয়ে বর্ণিত রাজপুরুষগণের পরিচয় ও রচনাপদ্ধতি হইতে র্তাহাদিগকে যেন এক বংশীয় বলিয়াই মনে হইতেছে, এই তিন নৃপতিকেই প্রথিত ক্ষত্রপ দেববংশ সস্তুত বলিয়া মনে করিতেছি। বাস্তবিক স্ব স্ব তাম্রশাসনে ধৰ্ম্মাদিত্যদেব, গোপচন্দ্র দেব ও সমাচারদেব দেব’ উপাধিতেই যেন ভূষিত হইয়াছেন। ১৭৭ পৃষ্ঠায় লিখিত হইয়াছে—“(মহীপালদেবের আধিপত্যকালেই) মুলতান মামুদের পুত্র মস্থদের রাজত্বকালে ( ১৯৩৩ খৃষ্টাব্দে ) লাহোরের শাসনকৰ্ত্ত আহহ্মদ নিয়ালতিগীন আসিয়া