পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, ষষ্ঠাংশ, দক্ষিণরাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, প্রথম খণ্ড).djvu/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ه/جا ) এ ছাড়া নব্য কুলপ্রথা ও নানাসমাজের গোষ্ঠীপতির পরিচয় সম্বন্ধে আলোচনা করিব । কিন্তু এই খণ্ডের আকার আর বাড়ান উচিত নহে মনে করিয়া ঘোষ ও মিয় বংশের বংশলতা ও অংশনির্ণয়কারিকা মুদ্রিত করিতে পারিলাম না। দক্ষিণরাঢ়ীয় দ্বিতীয় খণ্ড মুদ্রিত হইতেছে, তাহাতে ঐ সকল জ্ঞাতব্য বিবরণ প্রকাশিত হইবে। স্বর্গগত অনাথনাথ দেবের সাময়িক একজাই-কাগজ-পত্র হইতে জানা যায় ২৫শ পর্য্যায়ের একজাই-কালেও দক্ষিণরাঢ়ীয় কায়স্থ সমাজে ব্রাহ্মণ কুলাচাৰ্য্য ও কায়স্থ ঘটকের সংখ্যা ৪৫ জন ছিল। কিন্তু অধুনা একজনও কুলাচাৰ্য্য বা কুলঙ্গ ঘটক নাই, আর কেহ কুলপঞ্জিকা রক্ষা করেন না বা বংশপরিচয় লিখিয়া রাখেন না। এ কারণ ৫ম অধ্যায় হইতে ৮ম অধ্যায় পৰ্য্যন্ত যতদূর পারিয়াছি প্রাচীন কুলপঞ্জিকা ও কুলকারিকাগুলি প্রকাশ করিবার চেষ্টা করিয়াছি। পুরন্দর খানের সমর বা ১৩শ পৰ্য্যায় হইতে যে সকল বিভিন্ন কুলাচাৰ্য্য-রচিত সংস্কৃত কারিক ও বাঙ্গাল কারিকা পাওয়া গিয়াছে এবং এই গ্রন্থে মুদ্রিত হইয়াছে, তন্মধ্যে সংস্কৃত কারিকাগুলির ঐতিহাসিক মূল্য অনেক বেশী। বাঙ্গাল কাব্য বা সামাজিক সাহিত্যে বাঙ্গাল কারিকাগুলিও বিশেষ স্থান পাইবার যোগ্য। সংস্কৃত কারিকার ঐতিহাসিকতা প্রতিপাদনের জন্ত এখানে একটা কারিক উদ্ধৃত করিতেছি— “মুখ্যঃ শ্ৰীচক্রপাণিব মুমুকুটমণিশত্রনাঙ্গীরনাম গোঁড়ানাং সৰ্ব্বভৌমপ্রতিনিধিরভবৎ সৰ্ব্বকাৰ্য্যাধিকারী। কিং কাৰ্য্যং তস্ত শৌর্য্যং সকলগুণযুতে ঘোষবৰ্য্যে মুরারে গৃহূঞ্চোজলমিত্ৰং সহজরুতিবরং মাধবং বাসুদেবং ॥” পুরন্দরখানের অসাধারণ প্রতিপত্তি ও প্রভাবের পরিচয় অনেকে শুনিয়াছেন ; তৎপুত্র মন্ত্রিপ্রবর কেশবছত্রীর নামও মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের সমসাময়িক লীলাগ্রন্থসমূহে উজ্জল বর্ণে চিত্রিত হুইয়াছে। কিন্তু কেশবপুত্র ছত্রনাজীর চক্রপাণিবসুর নাম হয় ত অনেকে জানেন না। এই চক্রপাণি সাধারণ লোক ছিলেন না । তিনি গৌড়ের সাৰ্ব্বভৌম নৃপতি বা সুলতানের রাজপ্রতিনিধি (Viceroy) ও সৰ্ব্বকাৰ্য্যাধিকারী এবং মুলতানের পরই রাজকীয় শাসনবিভাগে সৰ্বশ্রেষ্ঠ অধিকারে অধিষ্ঠিত ছিলেন । সংস্কৃত কুলকারিকা হইতে সেই অতীত ইতিহাসের উজ্জ্বল স্মৃতি পাইতেছি । পূৰ্ব্বে স্বৰ্গীয় ঈশানচন্দ্র ঘটকরাজের মুখে শুনিয়াছি, “তিন শত বর্ষ পূৰ্ব্বে ঘটকবিশারদ সংস্কৃত ভাষায় সমীকরণকারিক রচনা করেন, পরে যাহার সংস্কৃত কারিকা রচনা করেন, পরবর্তী পৰ্য্যায়ের অংশ ধরিয়া সেই কারিক বাড়াইয়া যান।” আমরা সংস্কৃত কারিকাগুলি যে ভাবে যতদূর পাইয়াছি, অবিকল মুদ্রিত করিলাম, কোন প্রকার সংশোধন বা পরিবর্তন করিতে সাহসী হই নাই। ৪০ বর্ষ অনুসন্ধানের ফলে কুলপঞ্জিক এবং সংস্কৃত কারিক ও বাঙ্গাল কারিক বা ঢাকুরগুলি যতদূর সংগ্ৰহ করিতে সমর্থ হইয়াছি তাহা এই গ্রন্থে মুদিত হইয়াছে এবং ভবিষ্য খণ্ডেও মুদ্রিত হইবে। অনুসন্ধানের