পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (ব্রাহ্মণ কাণ্ড, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Séb. বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস , 't ব্রাহ্মণকাণ্ডৰ উভয়ের পৃথক ধৰ্ম্মমত জন্ত বোধ হয় প্রথমে বিশেষ সম্প্রীতি ছিল না। এরূপ প্রবাদ আছে— কৃষ্ণানন্দ আগমেশ্বরী দেবীর ভোগের জন্ম স্বীয় উদ্যানে উৎকৃষ্ট রম্ভ উৎপন্ন করাইয়াছিলেন, কিন্তু র্তাহার অনুপস্থিতিকালে উহা সহস্ৰাক্ষ তাহার ইষ্টদেবতাকে নিবেদন করেন। ইহাতে কৃষ্ণানন্দ মনে মনে কিঞ্চিৎ কৃষ্ট হন, কিন্তু প্রকাণ্ডে ভ্রাতাকে কিছু বলেন না। কৃষ্ণানন্দ প্রতিরাত্রে স্বহস্তে মাতৃমূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া পুজা সমাপনান্তে বিসর্জন দিতেন। একদিন এইরূপ পূজায় বসিয়াছেন, কিন্তু কিছুতেই আর পুজা শেষ হয় না। ভোগ নিৰেদন করেন, বোধ হয় ‘ম যেন বিমুখ হইয়া আর ভোগ গ্রহণ করেন না। কোনরূপ ক্রটি হইয়াছে ধারণায় পুনরায় ধ্যানযোগে মাকে আবাহন করেন। এদিকে ভ্রাতার পূজার বিলম্ব দেখিয়া সহস্রাক্ষ কারণানুসন্ধানে আসিয়া দেখেন আস্তাশক্তিস্বরূপিনী মা তাহার (সহস্রাক্ষের) ইষ্টদেব গোপালকে কোলে লইয়া সেই কদলী ভক্ষণ করাইতেছেন। কৃষ্ণানন্দও এই দৃপ্ত অবলোকন করিয়া বিস্মিত, স্তত্তিত ; তৎক্ষণাৎ ভ্রাতাকে গাঢ় আলিঙ্গন করিয়া ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তদবধি উভয়ের ভ্রাতৃসৌহার্দ্য পুনঃ স্থাপিত হয়। কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ “৩গ্রসার” নামক বিখ্যাত গ্রন্থের প্রণেতা। তাহার সময়ে তন্ত্রশাস্ত্রের বহুল আলোচনা হইত, কিন্তু তন্ত্রের সকল ক্রিয়া এক সঙ্গে পাওয়া যায় এমন কোন গ্রন্থ ছিল না। আগমবাগীশ নানা তন্ত্র আলোচনা করিয়া তন্ত্রসার প্রণয়ন করেন । ইহাতে তন্ত্রশাস্ত্রোক্ত সকল ক্রিয়৷ সন্নিবেশিত হইয়াছে। কিংবদন্তী আছে, তৎকালে আস্তাশক্তির কোনরূপ মুৰ্ত্তি না থাকায় তিনি আগমবাগীশকে স্বপ্নে আদেশ করেন “তুমি আমার মূৰ্ত্তি প্রকাশিত কর।” কৃষ্ণানন্দ "কিরূপ মূৰ্ত্তি প্রকাশ করিব ?” জিজ্ঞাস করায় আস্থাশক্তি প্রত্যুত্তরে বলেন “তুমি প্রত্যুষে উঠিয়া প্রথমে যে মূৰ্ত্তি দেখিবে, তাহাই আমার স্বরূপ বলিয়া জানিবে।” কৃষ্ণানন্দ প্রভাতে উঠিয়া বাহিরে আসিয়া দেখিলেন সম্মুখে এক নবযৌবনদীপ্ত ঘনমেঘবরণা গোপরমণী, বাম হস্তে গোময়পিও, দক্ষিণ হস্ত উক্ত পিণ্ড প্রাচীরে লেপন করিবার জন্য উদ্ধে উত্তোলিত, দক্ষিণ পদ সম্মুখে দ্যস্ত, বামপদ পশ্চাতে। গোপরমণী অকস্মাৎ কৃষ্ণানন্দ্রকে দেখিয়া লজ্জায় জিহবা বাহির করিয়া ফেলিলেন । কৃষ্ণানন্দ ইহাই আদ্যাশক্তির রূপ বলিয়া জানিলেন। প্রতিদিন গঙ্গাস্নানাস্তে গঙ্গাঙ্কলের পাত্রে করিয়া কুিছু গঙ্গামূত্তিক আনিয়া প্রতিদিন দক্ষিণাকালীর মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া গোপনে রাত্রি সাৰ্দ্ধঃ প্রিহরের সময় পূজা করিতেন এবং অতি প্রত্যুষে সৰ্ব্বলোকচক্ষুর অন্তরালে বিসর্জন দিয়া আসিতেন। একদিন কাৰ্ত্তিক মাসে অমাবস্ত। তিথিতে কৃষ্ণানন্দ মায়ের ঐক্কপ মৃন্ময়ী মুর্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া ভক্তিভাবে পুজা করিতেছিলেন এবং সিদ্ধপুরুষ জটিয়া ৰাষ্ট্র অতি গোপনে পুজাস্থলে জাগিয়া কৃঞ্চানন্দের অজ্ঞাতে তাহার পূজা অবলোকন করিতেছিলেন। কৃষ্ণানন্দ প্রথমে-ভোগ নিবেদন করিলেন, তাহার পর পায়সায় নিবেদনের অব্যবহিত পরেই পানীয় প্রদান করিলেন। ইহাতে জটীয় যাদু আল্প গুপ্তভাবে থাকিতে না পারিয়া বলিয়া উঠিলেন,