পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰয়াগ । , ad বিদ্রোহের পর অর্থাৎ ১৮৫৮ অব্দে মহারাণী ভিক্টোরিয়া রাজ্যভার স্বহস্তে গ্ৰহণ | করিলে এলাহাবাদ পুনরায় উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের রাজধানী হয়। তদবধি এই-- স্থান উদ্যান, প্রাসাদ, প্রশস্তরাজপথ, সেতু, সৌধমালা প্রভৃতিতে সুসজ্জিত হইয়া । আসিতেছে। এখানকার গঙ্গা-যমুনা-ব্রিজ, মিওর সেণ্টাল কলেজ, ও বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাকফাসন পার্ক, এলফ্রেড পার্ক প্রভৃতি উদ্যান, পাবলিক লাইব্রেরী, ভিক্টোরিয়া স্মৃতি-মন্দির ও মৰ্ম্মর-মূৰ্ত্তি, স্থাপত্য ও ভাস্কর শিল্পের উৎকৃষ্ট নিদর্শন। প্ৰয়াগের ন্যায় প্রাচীন মহানগরী এবং এলাহাবাদের ন্যায় রাজধানীর দর্শনীয় বিষয়ের বিবরণ ংক্ষেপে শেষ করা সম্ভবপর নহে। এখানে বিদ্যালয়, পাঠাগার, যন্ত্ৰালয়, সাহিত্যপ্রচারালয় প্রভৃতি জনহিতকর প্রধান প্ৰধান অনুষ্ঠানগুলির উল্লেখ পরবর্তী পৃষ্ঠাগুলিতে দুষ্ট হইবে। তাঁহাতে প্ৰায় সকল সাধারণ হিতানুষ্ঠানেই বাঙ্গালীর কৃতিত্ব অল্পাধিক পরিলক্ষিত হইবে। দেওয়ানী সনন্দে ইংরেজ এলাহাবাদ । প্রাপ্ত হইলে, এখানে বাঙ্গালীর আগমন হয়। ইতিপূৰ্ব্বে ইহা বাঙ্গালীদিগের তীর্থভ্ৰমণ, কল্পবাস এবং কচিৎ কাহারও প্রবাসের স্থান ছিল ; তখন ইহার নাম ছিল “ফকীরাবাদ” । কিন্তু দেড় শত বৎসর হইতে এখানে বাঙ্গালী উপনিবেশের সূত্রপাত হয়। কি রাজকাৰ্য্যের সহায়তায়, কি যুরোপীয় শিক্ষা ও চিকিৎসা প্ৰণালীর প্রবর্তন ও প্রচার বিষয়ে, কি কলেজ, বিদ্যালয়, পাঠগোষ্ঠী, প্রভৃতির প্রতিষ্ঠাকল্পে বাঙ্গালী অগ্ৰণী, ও ইংরেজের দক্ষিণ হস্ত স্বরূপ, ছিলেন। রাজকাৰ্য্যের সকল বিভাগেই বাঙ্গালীর একাধিপত্য এবং সর্বত্রই বাঙ্গালীর প্রভাব-প্ৰতিপত্তি দর্শনে এতদঞ্চলের অধিবাসিগণ বাঙ্গালীকে প্ৰথমে সন্ত্রম ও ভয়ের চক্ষে দেখিতে থাকেন- । পৃষ্ঠাহাদের ভয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঈর্ষার ভাব ও বড় অল্প ছিল না। তখন এতদ্দেশে হিন্দুস্থানীতে একটী প্ৰবাদই রচিত হইয়াছিল। লোকে বলিত “লড়ে টােপীওয়াল খায় ধোন্তীওয়ালা।” কিন্তু ক্ৰমে যখন শ্ৰেষ্ঠ বাঙ্গালীদিগের আবির্ভাব হইতে লাগিল, যখন মাধবদাস বাবাজী ও কৃষ্ণানন্দ ব্ৰহ্মচারীর ন্যায় দৈবশক্তিশালী পুণ্যচেতা, ৬/ প্যারীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ন্যায় পুরুষ-সিংহ, ৬হরবল্লভ চট্টোপাধ্যায়, পণ্ডিত বেণীমাধব ভট্টাচাৰ্য্য, রাসবিহারী ঘোষ প্রমুখ স্বধৰ্ম্মনিষ্ঠ এবং দেওয়ান জগমোহন বিশ্বাস প্রমুখ পরার্থপরায়ণ মহাপ্ৰাণ বাঙ্গালীর অভু্যদয় হইতে থাকে, তখন হইতে জনসাধারণের ঈর্ষা ভক্তিতে, ভয় প্রীতিতে পরিণত হয় এবং সৰ্ব্বত্রই বাঙ্গালীর নেতৃত্ব স্বীকৃত হয়। গ্রন্থের নানাস্থানে তাহার বহু নিদর্শন লিপিবদ্ধ হইয়াছে। , ,