পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রদেশে গ্রাজুয়েটদিগের দুর্দশার সীমা ছিল না। সাহেবেরা তাঁহাদিগকে অত্যন্ত কুনজরে দেখিতেন। গ্রাজুয়েট না হইয়া বরং মাইনর পাশ করিলে তখন খাতির ছিল। পণ্ডিত আদিত্যরাম ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় এ সম্বন্ধে “Reflector” পত্রে সুযুক্তিপূর্ণ প্ৰবন্ধ লিখিতে থাকেন। ১৮৬৯ অব্দে উহার প্রতি, গ্রিফিথ মহােদয়ের নজর পড়ে এবং তাঁহাতে সুফল ফলে। সেই হইতে এদেশে গ্রাজুয়েটদিগের সম্মান বৃদ্ধি হয়। শিক্ষিত সমাজের পক্ষে ইহা এক চিরস্মরণীয়, বিষয়। পণ্ডিত মহাশয় এবং তঁহার জ্যেষ্ঠভ্রাতা দূরদেশগত তীর্থযাত্রীদিগের, প্ৰতি প্রাগওয়াল প্ৰভৃতির অত্যাচার নিবারণ এবং নিঃসম্বল ও নিরাশ্রয় যাত্রিগণের সাহায্যদান বিষয়ে যৎপরোনাস্তি যত্ন পরিশ্রম ও ত্যাগাস্বীকার করিয়াছেন। তিনি প্ৰয়াগের কুম্ভমেলা সম্বন্ধে পায়োনিয়র পত্রে মধ্যে মধ্যে প্ৰবন্ধ লিখিয়া৷ যাত্রীদিগের যাবতীয় অভাব অভিযোগ কর্তৃপক্ষের গোচর করেন এবং যাহাতে মেলাস্থলে সমাগত লক্ষ লক্ষ নরনারীর কষ্টের লাঘব হয় তাহার সুপরামর্শ দান করিয়া জনসাধারণের কৃতজ্ঞতাভাজন হন। পূর্বোক্ত প্ৰবন্ধগুলি ১৮৮২ অব্দে তিনি “Kumbh Mela Notes : By the special native correspondent of the Pioneer” নাম দিয়া পুস্তিকাকারে প্রকাশ করেন। এই পুস্তক পাঠে. তীর্থযাত্ৰিগণ এবং সর্বসাধারণে কুম্ভ মেলার বিস্তারিত বিবরণ এবং প্ৰয়াগের প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিবৃত্ত অবগত হইতে পরিবেন। ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় সাধারণাহিতকর আরও অনেক বিষয় সংবাদপত্রে লিখিয়াছেন পুস্তকরচনা ব্যতীত যাহাতে মূল্যবান লুপ্ত সংস্কৃত গ্ৰন্থাদির পুনঃ প্রচার হয় তৎপক্ষে তাহার বিশেষ দৃষ্টি আছে। তিনি শিবশঙ্কুৰ্ম্ম প্রণীত “বাসুদেব, রসানন্দ,” শাঙ্গাধর প্রণীত “শান্তরস নির্দেশ” প্ৰভৃতি কয়েকখানি প্ৰাচীন এবং লুপ্ত গ্ৰন্থ উদ্ধার করত নিজাব্যয়ে মুদ্রিত করিয়া বিতরণ, করিয়াছেন। হিন্দী ভাষা ও সাহিত্যের তিনি একজন বিশেষ উৎসাহ দাতা ও পৃষ্ঠপোষক। কাশী-নাগরী-প্রচারিণী সভা সুতরাং তঁহাকে ছাড়িতে, পারেন নাই। তঁহারা তাঁহাকে সাদরে সভার সভ্যশ্রেণীভুক্ত করিয়াছেন। ‘সরস্বতী’ নামী হিন্দীভাষার উৎকৃষ্ট মাসিক পত্রিকায় সম্পাদকের লিখিত পণ্ডিত মহাশয়ের জীবনীতে র্তাহার হিন্দীভাষা ও সাহিত্যানুরাগের বিশেষ উল্লেখ আছে। অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা তাহার নিত্যনৈমিত্তিক কাৰ্য্য।