পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఏ9 বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী। দেন। তিনি ভোর চারিটার সময় বাহির হইয়া অপরাহ ৪ ঘটীকার সময় ফিরিয়া আইসেন। বাড়ী হইতে খেলা করিতে করিতে গঙ্গার চড়া পৰ্য্যন্ত গিয়া পৌছেন। এবং তথা হইতে ফিরিবার কালে বাড়ীর সন্নিকটে একস্থানে জুয়া খেলা দেখিতে দাড়াইয়া যান। তাহার পিতা সংবাদ পাইয়া এইরূপ অবস্থায় ধৃত করিয়া কঠিন শাস্তি প্ৰদান করেন। ক্রীড়ার জন্য তিনি কয়েকবার পিতামাতার নিকট তিরষ্কৃত এবং প্রহৃত হইয়াছিলেন। ১৮৩৩ খ্ৰীষ্টাব্দে তিনি ইংরাজী স্কুলে ভৰ্ত্তি হন। এখানে সেই প্ৰথম ইংরেজী শিক্ষার সুত্রপাত হইয়াছে। তৎকালীন বড়লাট মহামতি বেন্টিঙ্ক উচ্চ শিক্ষা সম্বন্ধীয় রাজ-আজ্ঞা ভারতের ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে ইতিপূৰ্ব্বে প্রচার করিয়াছেন। তদনুসারে এখানে “বুচর কি মহল” (কসাইবাড়ী) নামে একটি বাড়ীতে প্রথম উচ্চশিক্ষার উপযোগী একটী ইংরেজী বিদ্যালয় খোলা হইয়াছে। মাধবদাস বাবাজী যখন এই বিদ্যালয়ে ভৰ্ত্তি হন। তখন ক্লিফট ( Clift ) সাহেব অধ্যক্ষ ছিলেন। ক্লিফট সাহেবের ভূগোল তখন বিদ্যালয়ে পাঠ্য ছিল। এইস্থান হইতে স্কুলটি কীড়গঞ্জ থানার অন্তর্গত হ্যারিংটন সাহেবের বাংলায় এবং পরে তন্নিকটবৰ্ত্তী “বাঈকেবাগ” নামে গোয়ালিয়ারের মহারাজের উদ্যান সম্মুখস্থ একটি সরকারী বাড়ীতে স্থায়ীরূপে উঠিয়া যায়। এক্ষণে স্কুলটির নিদর্শন স্বরূপ এক বৃহৎ ভগ্ন প্রাচীর ও একটি সিংহদ্বার মাত্র অবশিষ্ট আছে ৷ প্ৰায় ৬০.৬৫ বৎসর পূৰ্ব্বে ইহার সন্মুখস্থ প্রাঙ্গনে একজন নৈষ্ঠিক বৈষ্ণবের সন্তান, সহাধ্যায়িগণ ও অধ্যাপক লুইশ সাহেবের সহিত ফুটবল ক্রিকেট । প্রভৃতি ক্রীড়া করিতেন। কলিকাতায় হেয়ার ডিরোজিও প্ৰভৃতি উদারমতি শিক্ষকগণ যেরূপ ছাত্ৰগণের সহিত আত্মীয়ভাবে মিশিতেন, লুইস সাহেব তদ্রুপ স্বীয় ছাত্রগণকে প্ৰাণের সহিত ভাল বাসিতেন, তাহদের সুখ দুঃখে সহানুভূতি প্ৰকাশ করিতেন এবং তাহদের নৈতিক এবং দৈহিক উন্নতির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখিতেন। ছাত্ৰগণ সাংসারিক কোন বিষয়েই র্তাহার পরামর্শ না লইয়া কাৰ্য্য করিতেন না। গুরু ও শিষ্যের মধ্যে যে একটা পবিত্র সম্বন্ধ আছে, যাহা এক্ষণে আকাশকুসুমে পরিণত হইয়াছে, লুইস সাহেবে তাহা পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান ছিল। মাধবদাস বাবাজী যখন তাহার পিতৃবৎ স্নেহ-মমতা, সরুল-স্বভাব, উচ্চশিক্ষা ও সত্যনিষ্ঠ প্ৰভৃতি বিবিধ সদগুণের প্রশংসা করিতেন, তখন সেই বৃদ্ধ বয়সে র্তাহার চক্ষুদুটি অশ্রুপূর্ণ হইয়া আসিত, তিনি বলিতেন, “এমন ইংরেজ |