পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ddibr . বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । লালাবাবুকে আলিঙ্গন করিলেন এবং সস্নেহ বচনে কহিলেন, “বাবা তোমার দীক্ষার সময় উপস্থিত।” -- এতদঞ্চলে লালাবাবুর নাম প্ৰাতঃস্মরণীয় এবং তঁাহার বৈরাগ্য ও প্ৰেমভক্তি সাধুগণেরও আদর্শ স্থল হইয়া আছে। ব্ৰজমণ্ডলে তাহার নাম ঘরে ঘরে বিস্তার লাভ করিয়াছে। কি গৃহী কি সন্ন্যাসী মথুরামণ্ডলে বাস করিয়া লালাবাবুর নাম শুনেন নাই এমন দেখা যায় না। ভারতের দূরদূরান্তর হইতে বৈষ্ণবগণ লালাবাবুর কুঞ্জ দেখিতে আগমন করেন এবং তঁহার সমাধি দর্শন করিয়া আপনাদিগকে ধন্য মনে করেন। বৃন্দাবনের শত শত তীর্থের মধ্যে ইহা একটি প্রধান তীর্থে পরিণত হইয়াছে! দীক্ষা গ্রহণের পর লালাবাবু মৌনব্ৰতাবলম্বন করিয়াছিলেন। এইরূপ অবস্থায় একদা তিনি রাজপথে বাহির হইয়াছেন এমন সময় গোয়ালিয়রের মহারাণী৷ ইহঁাকে দেখিয়া ভক্তিভরে নমস্কার করিতে উদ্যত হইলে ইনি মহারাণীর নিকট হইতে সরিয়া যাইবার কালে একটা সওয়ারের অশ্বের পদতলে পতিত হওয়ায় ১৮২২ খৃঃ অব্দে ৪২ বৎসর বয়সে র্তাহার পরলোকপ্ৰাপ্তি হয়। র্তাহার পত্নী স্বনামপ্রসিদ্ধ। রাণী কাত্যায়নী। বুলন্দাসহর, আলিগড় প্রভৃতি অঞ্চলে লালাবাবুর বিস্তৃত জমিদারী আছে। এক বুলন্দাসহর জেলাতেই তাহার ৭২ খানি গ্রাম ছিল। তন্মধ্যে কয়েকখানি হস্তান্তর হইয়া গিয়াছে। * লালাবাবুর পরই দেওয়ান নন্দকুমার বসুর নাম উল্লেখযোগ্য। তিনি ২৪ পরগণার অন্তর্গত বহড়গ্রামের জমীদার বংশের আদিপুরুষ। তিনি East India Company's sist, fitt's Custom House এর, কাশীমবাজার রেশমকুঠার, পাটনাকুঠার দেওয়ান ছিলেন। তিনি শেষ জীবন বৃন্দাবনেই অতিবাহিত করেন। এখানে তঁহার বন্ধু লালাবাবুর সহায়তায় একটী কুঞ্জবাটী স্থাপন করেন এবং তাঁহাতে রাধাকৃষ্ণের যুগলমূৰ্ত্তির প্রতিষ্ঠা ও বিগ্ৰহ সেবার ব্যয় নির্বাহাৰ্থ তিনি মথুরায় কিছু সম্পত্তিও ক্রয় করেন। নন্দকুমার বসু ১৮২১ খৃঃ অব্দে বৃন্দাবনে পুরাতন ভগ্নমন্দিরের পাশ্বে মদনমােহনের একটী নূতন মন্দির নিৰ্ম্মাণ করাইয়া দেন। গোবিন্দজী ও গোপীনাথের মন্দিরের সংস্কার কাৰ্য্যেও তিনি অর্থ সাহায্য করিয়াছিলেন। ১৮৩৫ খৃঃ অব্দে বৃন্দাবনে তাহার দেহান্ত হয়, মথুরামণ্ডলের বৈষ্ণব সম্প্রদায় তাহার নাম পরমশ্রদ্ধা ও ভক্তির সহিত

Mathura memoirs P. P. 237-239.