পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R\90 বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । রাজপথে কি অপূৰ্ব্ব দৃশ্যই হইয়াছিল! কোটিপতি রাজা মহারাজ সহসা যে সম্মানের অধিকারী হইতে পারেন না, অনটনের সংসারে জন্ম লইয়া, যৌবনের প্ৰথম উন্মেষে দারিদ্র্যের সহিত সংগ্ৰাম করিয়া এবং স্বীয় চরিত্র ও প্ৰতিভাবলে সমাজের শীর্ষস্থান অধিকার করিয়া, স্বৰ্গীয় অবিনাশচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ লক্ষ মানবের হৃদয় অধিকার করিয়াছিলেন। মৃত্যুকালে শতকণ্ঠে তাহার গৌরবগীতি উচ্চারিত হইল, সহস্র হস্তের পুষ্পবৃষ্টি দ্বারা তিনি জনসাধারণের পূজা প্ৰাপ্ত এবং সেই রাজদুলভ সম্মানের অধিকারী হইলেন। আগ্রা যখন উত্তরপশ্চিমে কোম্পানীর রাজধানী ছিল তখন ফতেগড় এপ্রদেশের একটী প্ৰধান স্থান ছিল। এখানে ইংরেজদিগের ফৌজ থাকিত, এখানে টাকশাল ছিল এবং রসদ বিভাগ, গনফ্যাক্টরী প্ৰভৃতির জন্য প্ৰজাসাধারণের বিস্তৃত কৰ্ম্মক্ষেত্র ছিল। প্রায় ৮০ বৎসর হইল স্বৰ্গীয় ঈশানচন্দ্র দেব কাশীপুর গনফ্যাক্টরী হইতে বদলী হইয়া ফতেগড়ে আইসেন। এখানে তঁহার কার্য্যদক্ষতায় মেজর এ্যাবট, কৰ্ণেল আলেকজাণ্ডার এবং কৰ্ণেল ফউস প্রমুখ বড় বড় সাহেবগণ র্তাহাকে বড়ই ভালবাসিতেন। বলা বাহুল্য র্তাহাদের অধীনে কৰ্ম্ম করিলেও ঈশানবাবুর সহিত র্তাহাদের বন্ধুত্ব স্থাপিত হয় ; বিলাত হইতে তাহারা ঈশানবাবুকে এবং তঁহার ভ্রাতুষ্পপুত্রকে যে সকল পত্র লিখিয়াছিলেন তন্মধ্যে আমরা কতকগুলি দেখিয়াছি। একখানি পত্র কর্ণেল ফউীস “It is an age my worthy friend, since I last wrote to you” এই বলিয়া আরম্ভ করিয়াছেন। আজিকালিকার দিনে কৰ্ত্ত কৰ্ম্মচারীর মধ্যে এরূপ সদ্ভাব বড় একটা দেখা যায় না। ফতেগড়ে এই দেবপরিবারের প্রভূত ক্ষমতা ছিল। গঙ্গার ধারে ইহাদের প্রকাণ্ড অট্টালিকা এখনও বিরাজমান। তাহার নিকটেই কমলবােসের মন্দির ; তাহার সন্নিহিত ছাতুবাবু নাটুবাবুদের মন্দির রহিয়াছে। কমলবােসের মন্দির চূড়ায় একটী সুবৰ্ণময় (Weathercock) হাওয়া কল ছিল, ক্যােণ্টনমেণ্টের গােরাগণ ইষ্টকাঘাতে তাহা চূৰ্ণ করিয়াছে। বিদ্রোহের সময় ইহাদের বাটী লুট হয়। আত্মরক্ষার্থে ইহারা সপরিবারে ফরাক্কাবাদের কোন হিন্দুস্থানী বন্ধুর বাটীতে লুকাইয়া থাকেন। স্বীয় জীবন শঙ্কটাপন্ন হইলেও ঈশানবাবু রবার্টসন সাহেবকে বিপদের সময় সাহায্য করেন (ইনি ভরতপুরের যুদ্ধে গিয়াছিলেন)। যখন রবার্টসন সাহেব স্ত্রী ও তিনটী কন্যা লইয়া নৌকা করিয়া