পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৩৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S88 বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । বুন্দোলখণ্ডের মধ্যে বীরপ্ৰসবিনী ঝাক্ষসীই প্রধান স্থান এবং অন্য তিনটী জেলা অপেক্ষা এই স্থানেই প্ৰবাসী এবং উপনিবেশিক বাঙ্গালীর সংখ্যা অধিক । এখানে গভর্ণমেণ্টেরও রেলের চাকরি লইয়া বাঙ্গালী প্ৰবাসী হইয়াছেন। মিউটিনির বহু পূর্বে স্বৰ্গীয় ব্ৰজনাথ চট্টোপাধ্যায় কমিসেরিয়েটের গোমস্ত হইয়া নানাস্থান পৰ্যটন করতঃ অবশেষে ঝাক্ষসীতে স্থায়ী হন। এখানে তাহার প্রভূত ক্ষমতা ও সম্মান ছিল। ব্ৰজনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ বাঙ্গালীগণের শিক্ষা সভ্যতা তখন স্থানীয় অধিবাসীদিগের আদর্শস্বরূপ ছিল । স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সামাজিক ব্যাপারেও তঁহাদের ক্ষমতা বড় অল্প ছিল না ; ঝাক্ষসীবাসিগণ গৃহবিবাদ উপস্থিত হইলে কথায় কথায় আদালতে না গিয়া প্ৰসিদ্ধ বাঙ্গালীর মধ্যস্ততা প্রার্থনা করিত, এবং সেই চরিত্রবান ও বুদ্ধিমান প্রবাসিগণের মীমাংসা শিরোধাৰ্য্য করিয়া । সকলে বিবাদের শান্তি করিত। ইহাদের আদি বাস বারাসতের নিকট নলকুড়া গ্রামে। প্রসিদ্ধ এবং প্রাচীন ঝান্সী প্রবাসিগণের মধ্যে ডিষ্ট্রক্ট এঞ্জিনিয়ার বাবু যদুনাথ চৌধুরী অন্যতম। যদুনাথ বাবু স্বজাতিবৎসল, পরোপকারী এবং বিদ্যানুরাগী। ইনি অনেকগুলি সদনুষ্ঠানের প্ৰেবৰ্ত্তক । তন্মধ্যে গোয়ালিয়রে মোরার ংলো ভাৰ্ণাকুলার স্কুল, গাজীপুর হাইস্কুল ও ঝান্সী ম্যাক্ডনেল হাইস্কুলের নূতন বাটী এবং অনাথালয় উল্লেখযোগ্য । অনাথালয়ের কার্য্য সাধারণের অর্থসাহায্যে বৎসর বৎসর সুচারুরূপে সম্পন্ন হইতেছিল, কিন্তু তঁহার অভাবে প্রবাসের এই কীৰ্ত্তি এক্ষণে লোপ পাইতে বসিয়াছে। এখানে স্বৰ্গীয় বাবু প্ৰসন্নকুমার চট্টোপাধ্যায়ের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি দুর্ভিক্ষ কমিশনার হইয়া গবৰ্ণমেণ্টের বিশেষ সাহায্য করায় রাজসরকার হইতে প্ৰশংসা পত্ৰ প্ৰাপ্ত হন। তিনি এখানে ভদ্রাসনাদি নিৰ্ম্মাণ করিয়া স্থায়ী বাস স্থাপন করেন। ইহঁর পুত্ৰগণ এখানে কৰ্ম্ম উপলক্ষে পশ্চিমের নানা স্থানে বাস করিতেছেন। দুই একটী অফিস উঠিয়া যাওয়ায় এখানে বাঙ্গালীর সংখ্যা পূর্বাপেক্ষা হ্রাস প্ৰাপ্ত হইয়াছে। ঝাক্ষসীর পুরাতন প্রবাসীদিগের মধ্যে স্থানীয় স্কুলের হেডমাষ্টার বাবু বিপিনবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশেষ প্ৰসিদ্ধ এবং প্রতিপত্তি সম্পন্ন ; এখানে তিনি বাড়ীঘর করিয়া স্থায়ী হইয়াছেন। তিনি স্থানীয় অধিবাসীদিগের মধ্যে এতদূর সম্মানিত যে কোন বিষয়ে বিবাদ বা দলাদলী স্থলে তিনি মধ্যস্থ হইলে উভয়পক্ষই তাহার বিচার মান্য করায় আর আদালতে গমন করিতে হয় না। এখানকার