পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৫৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

800 বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । মনোহর নগর বলিয়া প্ৰসিদ্ধ, তাহার আদর্শ মহানুভব বিদ্যাধরই আঁকিয়া দিয়াছিলেন। দুঃখের বিষয় এই মহাপুরুষের জীবনী দুলভ।” শ্ৰীযুক্ত গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্যায় মহাশয় এই সময় ইংরেজী রাজস্থানের আমুল অনুবাদ প্ৰকাণ্ড দুইখণ্ডে বাহির করেন। উপস্থিত ঐ পুস্তক আমার নিকটে না থাকায় বিদ্যাধরের জীবনী সম্বন্ধে তিনি কিছু সংগ্ৰহ করিয়াছেন কি না। বলিতে পারিলাম না । উক্ত গ্ৰন্থখানি এক্ষণে দুস্তপ্রাপ্য। ইহার ১২ বৎসর পরে অর্থাৎ ১৩০২ বঙ্গাব্দে গোপালশাস্ত্রী স্বাক্ষরিত “বিদেশী বাঙ্গালী” শীৰ্ষক একটী প্ৰবন্ধে বিদ্যাধরের জীবনী সম্বন্ধীয় বহু তথ্য সহ অনেক আজগুবি গল্প প্ৰকাশিত হইয়াছিল। তাহার সাত বৎসর পরে, আজ ১২ বৎসর হইল জয়পুরপ্রবাসী স্বৰ্গীয় মেঘনাথ ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় বিদ্যাধরের প্রপৌত্রের পৌত্র সুরজ বক্স মহাশয়ের নিকট হইতে প্ৰকৃত ও বিস্তৃত জীবনী সংগ্ৰহ করিয়া এডুকেশন গেজেটে প্ৰকাশ করেন। তাহার পর বৎসর ঐ প্ৰবন্ধ পরিবৰ্ত্তিত ও পরিবদ্ধিত করিয়া বিদ্যাধরের প্রতিকৃতিসহ প্ৰবাসীতে প্ৰকাশ করিবার জন্য আমায় পাঠাইয়া দেন, কিন্তু তখন সমগ্র রাজস্থানের বাঙ্গালী উপনিবেশের তথ্য সংগ্রহে ব্যস্ত থাকায় উহা তৎকালে প্ৰকাশিত না হওয়ায় পরবৎসর অর্থাৎ ১৩১১ বঙ্গাব্দে সাহিত্যপরিষৎ পত্রিকায় তিনি প্ৰকাশ করিয়াছিলেন। ঐ বৎসর হইতে আমরা প্ৰবাসীতে দেশীয় রাজ্যে বাঙ্গালী উপনিবেশের ইতিহাস প্ৰকাশ করিতে থাকি। সেই প্রসঙ্গে আমরা জয়পুরের প্রধান প্ৰধান কয়েকজন বাঙ্গালীর জীবনী সাধারণের গোচর করিয়াছিলাম। এক্ষণে ৬/ মেঘনাথ বাবুর স্বহস্তলিখিত অপ্ৰকাশিত কাগজপত্র হইতে এবং স্বনামপ্ৰসিদ্ধ ডাক্তার সূৰ্য্যকুমার সর্বাধিকারী বাহাদুরের পিতা ৬/ যদুনাথ সর্বাধিকারী মহাশয় কর্তৃক ৬ বৎসর পূর্বে লিখিত র্তাহার দিনলিপি হইতে প্ৰাপ্ত শিলাদেবী এবং বিদ্যাধরের পূর্বপুরুষ ও বাঙ্গালী উপনিবেশ সম্বন্ধে দুই একটী নূতন তথ্য সাধারণের গোচর করিলাম। পূর্বেই উক্ত হইয়াছে বিদ্যাধর স্বীয় প্রতিভার বলে জয়পুর রাজ্যের প্রধান মন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হইয়াছিলেন, বৰ্তমান সুদৃশ্য নগরী জয়পুর, যাহা সৌন্দৰ্য ও নিশ্বাশপারিপাটাে জগতের সকল ভ্রমণকারীদিগের দ্বারা প্ৰশংসিত হইয়া আসিতেছে এবং ভারতবর্ষের মধ্যে একমাত্র সুব্যবস্থিত নগরী বলিয়া প্রসিদ্ধিলাভ করিয়াছে, তাহার পত্তন ও নিৰ্ম্মণকৌশলের গৌরব বাঙ্গালী বিদ্যাধরেরই প্ৰাপ্য।