পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাশী । । 9ܓ রাজবংশ একটা ভয়ানক কলঙ্ক ও মহা বিপদ হইতে রক্ষা পান। ইংরেজ সেনাগণ যখন রাজবাটী দখল করিয়া রাণীদিগের গহনাপত্র লুঠ করিবার জন্য অন্তঃপুরে প্রবেশ করিতে যায় তখন কান্তবাবু তাহাদিগকে নিবারণ করেন। সেনাগণ উন্মত্ত হইয়া তাহার কথায় কৰ্ণপাত না, করায় তিনি স্বয়ং দ্বারদেশে দণ্ডায়মান হইয়া তাহাদিগকে বাধা প্ৰদান করেন। তাহাতেও কোন ফল না । হওয়ায় কান্তবাবু হেষ্টিংসকে গিয়া বলেন যে অন্তঃপুরবাসিনী রমণীগণ কখন গৃহের বাহির হন নাই, তাঁহাদের উপর সৈন্যগণ অত্যাচার করিবে ইহা বড়ই দুঃখ ও ক্ষোভের বিষয়। হেষ্টিংসের আদেশে তখন সেনাগণ নিরস্ত হয় এবং রমণীগণ । রক্ষা পান। কান্তবাবু শিবিকা আনাইয়া রাণীদিগকে এবং অন্যান্য স্ত্রীলোককে স্থানান্তরে লইয়া যান। রাণীরা কান্তবাবুর ব্যবহারে পরম তুষ্ট ও কৃতজ্ঞ হইয়া তাঁহাকে বিবিধ অলঙ্কার, লক্ষ্মীনারায়ণ শিলা, একমুখ রুদ্রাক্ষ, দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ এবং কতকগুলি বিগ্ৰহ দান করেন। সে সকল এক্ষণে কাশিমবাজার রাজবাটীতে রক্ষিত হইতেছে। বারাণসী হইতে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিয়া হেষ্টিংস সাহেব কান্তবাবুকে গাজিপুর ও আজিমগঞ্জের জায়গীর দান করেন। এইরূপে নানা কারণে বঙ্গের ধনী জমিদার, রাজা মহারাজা প্ৰমুখ অনেকেই অল্প বা বহু দিনের জন্য কাশীপ্রবাসী হন। যে “হরি ঘোষের গোহালি” বঙ্গে প্রবাদবাক্যে পরিণত হইয়া গিয়াছে, সেই বহু-আত্মীয়-স্বজন-প্ৰতিপালক অসাধারণ বদ্যান্য শ্ৰীহরিঘোষ এই সময় কাশীবাসী হন। কান্যকুব্জাগত স্বনাম প্ৰসিদ্ধ। মকরন্দ ঘোষের বংশ গৌড়নগর হইতে কালক্রমে কলিকাতা বাগবাজার কঁাটাপুকুরে আসিয়া বাস স্থাপন করেন। এখানকার ডাকাতে কালী-এক্ষণে যিনি বাগবাজারের সিদ্ধেশ্বরী নামে প্ৰসিদ্ধাপূৰ্ব্বে নরবলি গ্ৰহণ করিতেন। ডাকাতেরা ইহার সম্মুখে নরবলি দিয়া ইহার পূজা করিত। কঁটাপুকুরের উক্ত ঘোষবংশের রামসন্তোষ ঘোষ এই লোমহর্ষণ ব্যাপার দর্শন করিতে না পারিয়া ১৬৩৭ খ্ৰীঃ অব্দে এস্থান ত্যাগ করত। বৰ্দ্ধমানে গিয়া বাস করেন। ইনি বহুভাষাভিজ্ঞ ছিলেন ও ইংরেজ, ফরাসী এবং ওলন্দাজদিগের কুঠাতে কৰ্ম্ম করিয়া ৭০ বৎসর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন। হঁহার পুত্র বলরাম, পরে ফরাসী-চন্দ্রনগরে বাস করেন এবং বাণিজ্যের দ্বারা। প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী হন। কথিত আছে, ফরাসী গবৰ্ণর ডুপ্লে শাসন সংক্রান্ত