পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 8 বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । অনেক বিষয়ে তাহার পরামর্শ গ্ৰহণ করিতেন। বলরাম ১৭৫৬ খৃঃ অব্দে ৯৫ বৎসর বয়সে পরলোক গমন করেন। তঁহার রামহরি, শ্ৰীহরি, নরহরি ও শিবহারি নামে চারিপুত্রের মধ্যে দ্বিতীয় স্বজনপালক শ্ৰীহরিই স্বনামখ্যাত হরিঘোষ, তিনি মাননীয় ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর অধীনে মুঙ্গের কেল্লার দেওয়ানের কার্য্য করিতেন। কৰ্ম্ম হইতে অবসর লইবার পর ইনি কলিকাতায় গিয়া বাস স্থাপন করেন। এবং বহু অসহায় দরিদ্র স্বজাতিকে আপন ভবনে রাখিয়া তাহদের ভরণপোষণ করিতে থাকেন। বহু কুপোষ্য পালন হেতু তাহার ভদ্রাসন ক্ৰমে “হারিঘোষের গোহািল” নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। শেষ জীবনে তিনি তঁহার আদি বাসভূমি বাগবাজারের গাঙ্গুলীদিগের হস্তে বিক্রয় করিয়া তাহার জ্যেষ্ঠপুত্ৰ কাশীনাথকে লইয়া কাশীবাসী হন। ১৮০৬ খৃঃ অব্দে এখানে তঁাহার পরলোক প্ৰাপ্তি হয়। পরে কাশীনাথের নিঃসন্তান অবস্থায় কাশীতেই দেহান্ত হয়। * তাহার ভ্রাতুষ্পপুত্ৰ ভৈরবচন্দ্র ঘোষ কিছুকাল মিজ্জাপুরে সরকারী চাকরী করিতে করিতে ৩০ বৎসর বয়সে মৃত্যুমুখে পতিত হন। ইহঁরা পুনরায় দেশে ফিরিয়া আসিয়াছেন। উনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বঙ্গবিশ্রাতা পুটিয়ার রাণী ভুবনময়ী কাশীধামে আসিয়া বাঙ্গালীর কীৰ্ত্তি রাখিয়া গিয়াছেন। ইনি গঙ্গার তলদেশ হইতে প্ৰস্তরময় সোপান দ্বারা দশাশ্বমেধ ঘাট উত্তমরূপে বাধাইয়৷ তদুপরি ব্ৰহ্মপুরী মন্দির ও তন্মধ্যে শিবলিঙ্গ প্ৰতিষ্ঠা করিয়াছেন। দশাশ্বমেধ ঘাটের সন্নিকটস্থ ‘প্রাগ ঘাট’ও রাণী ভুবনময়ীর কীৰ্ত্তি । * বাঙ্গালীটােলার শিবমন্দির সংলগ্ন বৃহৎ অন্নসত্র ইহারই স্থাপিত। এই অন্নসত্রে অনেক অনাথ বঙ্গসন্তান নিত্য প্ৰতিপালিত হইতেছে। দুর্গাকুণ্ডের নিকটস্থ বিস্তীর্ণ বাগানবাটী। রাণী ভুবনময়ীর। এক্ষণে ইহা পুটিয়ার বাগান নামে অভিহিত। প্ৰাতঃস্মরণীয়া মহারাণী শরৎসুন্দরী দেবী এই বংশের রাজবধু। খড়দহের বিখ্যাত বিশ্বাস বংশের অন্যতম। বংশধর চট্টগ্রামের নিমকমহলের দেওয়ান কোটিপতি রামহরি বিশ্বাস কৰ্ম্ম হইতে অবসর গ্ৰহণ করিয়া কাশী গয়া বুন্দাবন প্ৰভৃতি বহুতীর্থে বাস করেন। তিনিও বারাণসীতে কয়েকটী শিবমন্দির

  • এই ঘাট সম্বন্ধে প্ৰবাদ আছে ইহা ১৮ভদ্রকালী দেবী বরদাকণ্ঠ নামক কোন বাঙ্গালী রাজা দ্বারা নিৰ্ম্মাণ করাইয়া লয়েন, কিন্তু পরে রাণীর দখলে পড়ায় ঘাট ও ঘাট নিৰ্ম্মাতার নাম লোপ পায়। এইরূপ নদীয়ার সত্ৰালয়, ৬ রামহরি ঠাকুরের সত্ৰালয়, মথুরা সত্ৰালয় ইত্যাদির লোপ-স্থান মাত্র আছে, তাহাও এক্ষণে বেদখল ।