পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృతీ বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । শ্ৰীদাম ডাকিয়া বলে কানাই আমার ঘরে। সভাকার প্রাণ গোপাল লুকাইয়া মায়ের ডরে। কত ভঙ্গী জান গোপাল নাচিতে নাচিতে । অরুণ-কিরণ দিছে চরণ তুলিতে ॥ ব্যাঘ্র-নখ (১) মণিহার হিয়ার মাঝারে । দোলে চরণে নুপুর কিবা রুণু ঝুমু বোলে । গোপাল নাচিছে তুড়ি দিয়া । কোথা গেলা নন্দ রায় আনন্দ বহিয়া যায় দেখসিয়া নয়ন ভরিয়া ॥ বিচিত্র নাট চরণে চাদের হাট চলয়ে খঞ্জনিয়া পার্থী। সাধ করিয়া মায় নুপুর দিয়াইনু পায় পাখানি তুলিয়া নাচ দেখি । আমার শপতি লাগে না ধাইহ ধেমুর আগে পরাণের পরাণ নীলমণি । নিকটে রাখিহু ধেন্থ পূরিয় মোহন বেণু ঘরে বসি আমি যেন শুনি। বলাই ধাইবে আগে আর শিশু বামভাগে শ্ৰীদাম সুদাম সব পাছে। তুমি তার মাঝে ধাইয় সঙ্গ-ছাড়া না হইয় মাঠে বড় রিপু-ভয় আছে। ক্ষুধা হৈলে চাহি খাইও পথ-পানে চাহি যাইও অতিশয় তৃণাঞ্জুর পথে। কারু বোলে বড় ধেনু ফিরাইতে না যাইহ কানু হাত তুলি দেহ মোর মাথে । থাকিহ তরুর ছায় মিনতি করিছে মায় রবি যেন না লাগয়ে গায়। যাদবেন্দ্রে সঙ্গে লইয়া যেও ধীরে পথ চাইয়া কুসুম যোগাবে রাঙ্গা পায়। শ্ৰীদাম দাস । কি করিব ওরে শ্ৰীদাম করিব আমি কি। চুড়া বান্ধি ধড়া পরি বসি রয়্যাছি। মায়ে না বলিয়া আমি যদি যাই গোঠে । মরিবে আমার মা পড়িবে সঙ্কটে ॥ একদিন নবনী খাইয়াছিলাম লুকায়া ॥ মরিতে ছিলেন মা আমায় না দেখিয়া ॥ _(১) এই যুগে ব্যাঘ্র-নখ ছেলেদের গলায় দোলান একটি প্রচলিত রীতি ছিল। যথা, কবিকঙ্কণ চণ্ডীতে শিশু কালকেতুর বর্ণনায়— “বুক শোভে ব্যাঘ্র-নখে, অঙ্গে রাঙ্গা ধূলি মাখে।”