পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পদাবলী—বিদ্যাপতি—১৪-১৫শ শতাব্দী। ভাগে মিলয় ইহ প্রেম-সঙ্ঘাতি (১)। ভাগে মিলয় ইহ সুখময় রাতি ॥ আজু যদি মানিনি তেজবি কান্ত। জনম গোয়াওবি রোই একান্ত ॥ (২) বিদ্যাপতি কহ প্রেমক-রীত। যাচিত (৩) তেজি ন হোয় উচিত। চরণ-নথরমণী(ণি ?)-রঞ্জন ছাদ । ধরণী লোটায়ল গোকুলচাদ ॥ (৪) ঢরকি চরকি পড় লোচন-লোর। কতরূপে মিনতি কয়ল পহু মোর ॥ লাগল কুদিন কয়ল হাম মান। অবহু ন নিকশয় কঠিন পরাণ ॥ (৫) নারী জনমে হাম ন করল ভাগি (৬)। মরণ-শরণ ভেল মানক-লাগি । (৭) (১) সঙ্ঘাতি= বন্ধু। (২) হে মানিনি! আজ যদি কান্তকে পরিত্যাগ কর, তবে একান্তই কাদিয়া জন্ম কাটাইতে হইবে। (৩) উপযাচককে। (৪) এই পদের অর্থ অনেকে অনেকক্কপ করিয়াছেন। কেহ বলেন,—“নখর-মণি-রঞ্জন’ অর্থ নর্থ-রঞ্জনী বা নরুণ, অর্থাৎ শ্ৰীকৃষ্ণ কাল, সুতরাং রাধার পায়ের নীচে নরুণের মত হইয়া পড়িয়াছেন। এই অর্থ যাহার করেন, তাহদের বিদ্যাপতির কবিতা না পড়াই ভাল। ঈদৃশ উৎকট অর্থ-সম্বন্ধে আর বাগ্‌জাল বিস্তারের প্রয়োজন নাই। কেহ কেহ অর্থ করেন,—রাধিকার চরণ-নখর-স্বরূপ যে মণি তাহার রঞ্জন অর্থাৎ শোভাবৰ্দ্ধন করিয়া গোকুলচন্দ্র ভূতলে লুষ্ঠিত হইলেন। আমাদের বিশ্বাস– “চরণ-নগর-মণি” ছত্রের শেষের হ্রস্ব ইকারটা দীর্ঘ ঈকার হইবে ; তাহা হইলে অর্থ হয়,—যে কৃষ্ণের চরণ-নখর রমণীকুলের রঞ্জন-স্বরূপ (যাহার চরণ-নখে রমণী মনমুগ্ধ), তিনি রাধার চরণতলে লুষ্ঠিত হইলেন। চরণ-নখ-রমণী-রঞ্জন ছাদ = যাহার চরণ, নখ, রমণীমোহন ছাদ। এই সমস্ত পদই গীত হইত, স্থতরাং হ্রস্ব ইকার ও দীর্ঘ ঈকার সম্বন্ধে অনেক স্থলে গোল ঘটিয়াছে। (৫) কঠিন পরাণ এখনও নির্গত হইল না। (৬) ভাগ্য । (৭) মানের জন্য মৃত্যুর শরণ লইলাম অর্থাৎ প্রাণ দিতে বসিলাম । ) e )(t