পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

HVE)8 বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । কহেন ধান্তাদির নিত্যবীজ পৃথিবীতে রোপণ করিলে পরে পৃথিবী অপ তেজঃ বায়ু ও আকাশের অংশে উঠিয়া ধান্তাদির বীজে প্রবেশ করিয়া ধান্তের গাছ জন্মিয় পরে সেই গাছে ধান্তাদি জন্মে পরে সেই ধান্তাদিতে তণ্ডুলাদি জন্মিয় পরে অন্নাদি জন্মে। পরে সেই অন্নাদি পিতা মাতা ভোজন করিলে উদরের মধ্যে জঠর-অগ্নিতে পাক হৈয়া শুক্ৰশোণিত জন্মে। পরে পিতামাতার সেই শুক্ৰশোণিত একত্র হইয়া মাতার গর্ভ হএ । পরে স্বভাবেতে ঐ মাতৃগর্ভের মধ্যে সকল শরীর জন্মিলে পরে দশমাসে মাত আমার ঐ শরীর প্রসব করিয়াছেন। আরবার সাধু জিজ্ঞাসেন তুমার ঐ শরীরে কটি ইন্দ্রিয়। অজ্ঞানী জীবে কহেন আমার ঐ শরীরে দশ ইন্দ্রিয়। সেই কি কি। কর্ণ চৰ্ম্ম-চক্ষু জিহবা নাসিক ঐ জ্ঞান-ইন্দ্রিয় পঞ্চ। আর বাক্য পাণি পাদ পায়ু উপস্থ ঐ কৰ্ম্ম-ইন্দ্রিয় পঞ্চ। সাধু জিজ্ঞাসেন তুমার জ্ঞান পঞ্চ ইন্দ্রিয়ে কি কি জ্ঞান করেন। অজ্ঞানী জীবে কহেন আমার কর্ণ জ্ঞানইন্দ্রিয়ে শব্দগুণ জ্ঞান করেন। এবং চৰ্ম্ম জ্ঞান-ইন্দ্রিয়ে শীতল উষ্ণ স্পৰ্শজ্ঞান করেন। চক্ষু জ্ঞান-ইন্দ্রিয়ে শুভ্র কৃষ্ণাদি রূপ জ্ঞান করেন। জিহা জ্ঞান ইন্দ্রিয়ে তিক্ত মিষ্ট রস জ্ঞান করেন। নাসিক জ্ঞান-ইন্দ্রিয়ে সুগন্ধ দুৰ্গন্ধ জ্ঞান করেন। সাধু জিজ্ঞাসেন ঐ শব্দাদি পঞ্চ গুণ কাহার তাহ কহ । অজ্ঞানী জীব কহেন আকাশ ভূতের শব্দ গুণ বায়ু ভূতের স্পর্শ গুণ তেজঃ ভূতের রূপ গুণ অপ্‌ ভূতের রস গুণ পৃথিবী ভূতের গন্ধ গুণ ঐ পঞ্চ ভূতের পঞ্চ গুণ কহিলাম। সাধু জিজ্ঞাসেন কর্ণাদি পঞ্চ জ্ঞান-ইন্দ্রিয়ে কেন আকাশাদি পঞ্চ ভূতের শব্দাদি গুণ জ্ঞান করেন। অজ্ঞানী জীবে কহে আকাশ ভূতের অংশে জন্মিয়াছে যে কৰ্ণ অতএব কর্ণে আকাশের শব্দগুণ জ্ঞান করেন এবং বায়ু ভূতের অংশে জন্মিয়াছে চৰ্ম্ম অতএব চৰ্ম্মে স্পর্শগুণ জ্ঞান করেন এবং তেজো ভূতের অংশে জন্মিয়াছে যে চক্ষু অতএব তেজে ভূতে রূপগুণ জ্ঞান করেন এবং অপু ভূতের অংশে জন্মিয়াছে জিহবা অতএব জিহাতে অপের রসগুণ জ্ঞান করেন এবং পৃথিবী ভূতের অংশে জন্মিয়াছে যে নাসিক অতএব নাসিকাতে পৃথিবীর গন্ধগুণ জ্ঞান করেন। সাধু জিজ্ঞাসেন তুমার কর্ণাদি পঞ্চ জ্ঞান-ইন্দ্রিয়ে নাসিকাদি পঞ্চ ভূতের শব্দাদি পঞ্চগুণ জ্ঞান করেন। তুমি পরমেশ্বর শ্ৰীকৃষ্ণকে কুন ইন্দ্রিয়ে জ্ঞান করেন। অজ্ঞানী জীব কহেন পরমেশ্বর শ্ৰীকৃষ্ণকে মনের দ্বারাএ জ্ঞান করি। সাধু জিজ্ঞাসেন যখন মনের সহিত কর্ণাদি পঞ্চ জ্ঞান-ইন্দ্রিয়ের সন্ধিযোগ হএ তখন শব্দাদি পঞ্চ গুণ জ্ঞান করিতে পারে। মনের সহিত ইন্দ্রিয়-আদির যোগ না হইলে শব্দাদি গুণ করিতে পারে না। তুমি কি প্রকারে পঞ্চ ইন্দ্রিয় আদি বিনে কেবল মনের মধ্যে পরমেশ্বর শ্ৰীকৃষ্ণকে জ্ঞান করিতে পারেন তাহ বিবেচনা করিয়া কহ । অজ্ঞানী জীবে কহেন এখন বুঝিলাম