পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

›ማNX» গঙ্গাস্নান-সঙ্গিনী । বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । বুঝিতে পারিয়া একখানি কাপড়ে কিছু জলপান দুটা আম বাধিয়া একটা পুটলি করিয়া আমাকে আনিয়া দিলেন। তখন ঐ পুটলি দেখিয় আমার মনে যে কি পৰ্য্যন্ত আহলাদ হইল তাহা আমি বলিতে পারি না। আমার বোধ হইল আমি যেন কত অমূল্য রত্নই প্রাপ্ত হইলাম আমার আনন্দের আর সীমা থাকিল না। এখন তাহার শতগুণ বেশী আহলাদের কাষ হইলেও তেনন আহলাদ মনে বোধ হয় না। আহা ! সে যে কি আহলাদের দিন ছিল তাহ বলা যায় না। তখন আমি ঐ পুটলি লইয়া সেই বালিকার সঙ্গে গঙ্গাস্বানে চলিলাম। পরে এক পুষ্করিণীর ধারে বসিয়া জলপান খুলিলাম। তখন আমার সঙ্গিনী বালিকা আমাকে বলিল দেখ তুমি যেন আমার মা আমি যেন তোমার ছেলে। তুমি আমাকে কোলে লইয়া খাওয়াইয়া দাও। তখন আমি বলিলাম তবে তুমি আমার কোলের কাছে বৈস। তখন সে আমার কোলের কাছে বসিল । আমি বলিলাম আচ্ছ। তবে খাও । এই বলিয়া ঐ সকল জলপান উহাকে খাওয়াইয়া দিলাম। পরে সে বলিল আচাইয়া দাও। তখন আমি ভারী বিপদে পড়িলাম। কি কবির ভাবিতে লাগিলাম। আমি জলে নামিয়াও জল আনিতে পারিলাম না। অনেক চেষ্টা করিয়া দেখিলাম কোন মতেই কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিলাম না। আমার সঙ্গিনী ঐ অপরাধে আমাকে একটা চড় মারিল। আমি মা’র খাইয়া ভয়ে কঁাপিতে লাগিলাম। আমার দুই চক্ষে জল পড়িতে লাগিল। আমি অমনি দুই হাত দিয়া চক্ষের জল মুছিয়া ফেলিলাম। আর মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম যে আমাকে মারিতে কেহ বুঝি দেখিল এই ভয়ে আমি চারি দিকে তাকাইতে লাগিলাম । ঐ সময়ে আমার খেলার সঙ্গিনী আর একটা বালিকা সেই স্থানে ছিল। সে উহাকে বলিল তুমি কেমন মেয়ে উহার সকল জলপান খাইলে আম দুইটাও খাইলে আবার উহাকে মারিয়া কাদাইতেছ। আমি গিয়া উহার মায়ের কাছে বলিয়া দিই। এই বলিয়া সে আমাদের বাটীতে গিয়া সকলের নিকট বলিয়া পুনৰ্ব্বার আমাদের নিকট আসিয়া বলিল আমি তোমার মায়ের কাছে সকল কথা বলিয়া দিয়াছি। দেখ এখনি কি করে। ঐ কথা শুনিয়া আমার ভারী ভয় হইল আমি কাদিতে লাগিলাম। তখন আমার গঙ্গাস্নানের সঙ্গিনী বালিকা বলিল উনি একটা সোহাগের আরসী কিছু না বলিতেই কাদিয়া উঠেন। এই বলিয়া আমার মুখে আর একটা ঠোকনা মারিল। তখন আমার অত্যন্ত ভয় হইল। আমি চক্ষের জল মুছিয়া মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম