সেই জামাতার নিন্দা-কথা কখনো না বলো।
সেই পাতকে দক্ষরাজার যজ্ঞ নষ্ট হলো॥
আমি জন্মে জন্মে শম্ভুনাম সেধেছিলাম কত।
দুর্গা-সখী শিব জামাতা মিলিছে মনোমত॥
তবে চল রতি শীঘ্রগতি গৌণ কর কিসে।
তোমার কথায় প্রাণের ব্যথা জারলো যেন বিষে।
আমি হিয়ানলে শোকজলে দুঃখে ডুবে আছি।
তোমার গৌরী ধন্বন্তরি তারে আনলে বাঁচি॥
গিরি বলে এবার গেলে আস্বো বিরূপ হয়ে।
যা হ'ক তা হ'ক যাব কোন্ দ্রব্য লয়ে॥
তা শুনে মেনকা রাণী উঠ্লেন শীঘ্র করি।
চিনি মণ্ডা মনোহরা দিলেন ভাণ্ড ভরি॥
মিছিরির সর মিছরির লাড়ু স্বস্তি থরে থর।
এলাচ-দানা চিনি-পানী ক্ষীর তত্তীসর॥
গুড় চিনি বাতাসা মধু কত লেখা যায়।
ভাঙের লাড়ু সিদ্ধি পেলে পঞ্চ মুখে খায়॥
তবে গিরি যত্ন করি নিলেন উপহার।
পঞ্চমীতে যাত্রা করেন শাস্ত্রের বিচার॥
ভাবি মনে গজাননে করেন দণ্ডবৎ।
গঙ্গা আন্তে যেমন চল্লেন ভগীরথ॥
কৈলাস-পুরী সভা করি বসেছে দেবগণ।
দেব-সঙ্গে নারদ মুনি আর পঞ্চানন॥
বিপদকালে নারদ মুনি তুষ্ট হলেন যাতে।
ঝাড়্লেন কোন্দলের ঝুলী মহাদেবের মাথে॥
শ্বশুরে জামাতায় যখন দরশন হলো।
হুতাশন-মধ্যে যেন ঘৃত ঢেলে দিল॥
বিষ-নাল ভাঙ্গিলে যেমন ব্যথা পান ফণী।
গৰ্জ্জিয়া উঠিলেন ঠাকুর দেব-চূড়ামণি॥
বল্ছে বাণী শূলপাণি ক্রোধ করে মনে।
ভিখারীর মুখ দেখিতে পাষাণ আস্ছেন কেনে॥
বল্ছে গিরি কপট করি কি বলিব আর।
গত নিশি দেবদৃষ্টি হয়েছে মেনকার॥
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৬০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯০২
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।