চতুর্থ পরিচ্ছেদ
মনোরমা মাধবীর বাল্যকালের সখী, তাহাকে বহুদিন পত্র লেখা হয় নাই, উত্তর না পাইয়া সে বিষম চটিয়া গিয়াছিল। আজ দ্বিপ্রহরের পর একটু সময় করিয়া, মাধবী তাহাকে পত্র লিখিতে বসিয়াছিল। এমন সময় প্রমীলা আসিয়া ডাকিল, “বড়দিদি!” মাধবী মুখ তুলিয়া কহিল, “কি?”
“মাষ্টার-মহাশয়ের চশমা কোথায় হারিয়ে গেছে— একটা চশমা দাও।” মাধবী হাসিয়া ফেলিল। “তোমার মাষ্টার-মশায়কে বলগে, আমি কি চশমার দোকান করি?” প্রমীলা ছুটিয়া যাইতেছিল। মাধবী তাহাকে ডাকিয়া ফিরাইল, “কোথায় যাচ্ছিস্?”
“বল্তে।”
“তার চেয়ে সরকার-মশায়কে ডেকে নিয়ে আয়।” প্রমীলা সরকার-মশায়কে ডাকিয়া আনিলে, মাধবী বলিয়া দিল— “মাষ্টারবাবু চশমা হারিয়েছে, ভাল দেখে একটা কিনে দাওগে।”
সরকার চলিয়া গেলে, সে মনোরমাকে পত্র লিখিল, শেষে লিখিয়া দিল—
“প্রমীলার জন্য বাবা একজন শিক্ষক নিযুক্ত করিয়াছেন— তাহাকে মানুষ বলিলেও হয়, ছোট ছেলে বলিলেও হয়। আমার বোধ হয়, ইহার পূর্ব্বে সে কখনও বাটীর বাহিরে বাহির হয় নাই— সংসারের কিছুই জানে না। তাহাকে না দেখিলে, না তত্ত্ব লইলে তাহার এক দণ্ডও চলে না— আমার অর্দ্ধেক সময়, সে কাড়িয়া