বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বড়দিদি-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বড়দিদি
৩৬


কিন্তু বক্ষে ও পার্শ্বে প্রচণ্ড আঘাত পাইয়া, অজ্ঞান হইয়া পড়িয়া গেল; পুলিশ আসিয়া গাড়ী করিয়া হাঁসপাতালে লইয়া গেল। চার পাঁচদিন অজ্ঞান অবস্থায় অতীত হইবার পর, রাত্রে চক্ষু চাহিয়া কহিল, “বড়দিদি!”

 কলেজের একজন ছাত্র, যে সে রাত্রে ‘ডিউটিতে’ ছিল, শুনিতে পাইয়া কাছে আসিয়া দাঁড়াইল। সুরেন্দ্র কহিল, “বড়দিদি এসেছেন?”

 “কাল সকালে আস্‌বেন।”

 পরদিন সুরেন্দ্রের বেশ জ্ঞান রহিল, কিন্তু বড়দিদির কথা কহিল না, প্রবল জ্বরে সমস্তদিন ছট্‌ফট্‌ করিয়া সন্ধ্যার সময় একজনকে জিজ্ঞাসা করিল, “আমি হাঁসপাতালে আছি?”

 “হাঁ।”

 “কেন?”

 আপনি গাড়ী–চাপা পড়েছিলেন।”

 “বাঁচবার আশা আছে?”

 “নিশ্চয়।”

 পরদিন সেই ছাত্রটি কাছে আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার আত্মীয় কেহ এখানে আছেন?”

 “কেহ না।”

 “তবে সে রাত্রে বড়দিদি বলে ডাক্‌ছিলেন কাকে? তিনি কি এখানে আছেন?”

 “আছেন, কিন্তু তিনি আস্‌তে পারবেন না। আমার পিতাকে সংবাদ দিতে পারেন?”