বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বড়দিদি-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বড়দিদি
৫০


 শান্তি তাহার মুখ চাপিয়া ধরিল, “তোমার পায়ে পড়ি, আর ও সব বলো না।” “আহা, তিনি যদি আসেন ত আমার কোনো দুঃখই থাকে না!”

 অভিমানে শান্তির বুক পূরিয়া গেল। এইমাত্র সে বলিয়াছিল, স্বামীর সে কেহ নহে। সুরেন্দ্র কিন্তু অত বুঝিল না। অত দেখিল না, যাহা বলিতেছিল, তাহাতে বড় আনন্দ হয়, কহিল, “তুমি নিজে গিয়ে বড়দিদিকে ডেকে এনো, কেমন?” শান্তি মাথা নাড়িয়া সম্মতি দিল।

 “তিনি এলে দেখ্‌তে পাবে, আমার কোন কষ্ট থাকবে না।” শান্তির চক্ষু ফাটিয়া জল আসিতে লাগিল।

 পরদিন সে দাসীকে দিয়া মথুরবাবুকে সংবাদ প্রেরণ করিল যে, বাগানবাটীতে যাহাকে আনা হইয়াছে, এখনি তাহাকে তাড়াইয়া না দিলে, তাহাকে আর ম্যানেজারের কাজ করিতে হইবে না! স্বামীকে শাসাইয়া বলিল, “আর যাই হোক্‌, তুমি বাড়ীর বাহির হইলে আমি মাথা খুঁড়ে রক্তগঙ্গা হয়ে মর্‌ব।”

 “তাই ত– ওঁরা কিন্তু–”

 “আমি ‘কিন্তুর’ ব্যবস্থা করছি।” বলিয়া শান্তি দাসীকে পুনর্ব্বার ডাকিয়া হুকুম করিয়া দিল,– “দারোয়ানকে ব’লে দে, যেন ঐ হতভাগারা আমার বাড়ীতে না ঢুক্‌তে পায়!”

 আর সুবিধা নাই দেখিয়া মথুরবাবু এলোকেশীকে বিদায় করিয়া দিলেন। ইয়ার-দলও ছত্র-ভঙ্গ হইয়া পড়িল। তাহার পর তিনি চুটাইয়া জমিদারী দেখিতে মন দিলেন।

 সুরেন্দ্রনাথেরও সম্প্রতি কলিকাতায় যাওয়া হইল না, বুকের