বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বড়দিদি-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বড়দিদি
৬৪


 টাকার কথা শুনিয়া শান্তি মথুরনাথের প্রতি একটু নরম হইয়া পড়িল। মৃদু হাসিয়া কহিল, “তা ম্যানেজার-বাবুর বা দোষ কি? অত টাকা কেমন ক’রে ছেড়ে দেন?”

 সুরেন্দ্রনাথ অন্যমনস্ক হইয়া ভাবিতে লাগিল। শান্তি প্রশ্ন করিল, “অত টাকা ছেড়ে দেবে?”

 “দেব না ত কি, অসহায় বিধবাকে বাড়ী ছাড়া কর্‌ব–? তূমি কি পরামর্শ দাও?”

 কথাটার ভিতর যতটুকু জ্বালা ছিল, সবটুকু শান্তির গায়ে লাগিল। অপ্রতিভ হইয়া দুঃখিতভাবে সে বলিল, “না, বাড়ী-ছাড়া কর্‌তে বলি না। আর তোমার টাকা তুমি দান কর্‌বে, আমি তাতে বাধা দেব কেন?”

 সুরেন্দ্র হাসিয়া কহিলেন, “সে কথা নয় শান্তি, আমার টাকা কি তোমার নয়? কিন্তু বল দেখি, আমি যখন না থাকব, তখন তুমি–” “ও কি কথা–” “তুমি– আমি যা ভালবাসি, তা’ কর্‌বে ত?”

 শান্তির চোখে জল আসিল, কেন না, স্বামীর শারীরিক অবস্থা ভাল নহে, বলিল, “ও কথা কেন বল?” “বড় ভাল লাগে, তাই বলি। তুমি, আমার কথা, আমার সাধ-ইচ্ছা জেনে রাখ্‌বে না, শান্তি?”

 শান্তি চক্ষে অঞ্চল দিয়া মাথা নাড়িল।

 কিছুক্ষণ পরে সুরেন্দ্র পুনরায় কহিলেন, “আমার বড়দিদির নাম।” শান্তি অঞ্চল সরাইয়া সুরেন্দ্রের মুখপানে চাহিল।

 সুরেন্দ্র একখানা কাগজ দেখাইয়া বলিলেন, “এই দেখ, আমার