পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
বত্রিশ সিংহাসন।

পুরুষকে বলিলেন ইহার মস্তক ছেদন পূর্ব্বক হার দুই চক্ষুঃ বাহির করিয়া আমার নিকটে লইয়া আইস।

 এই আজ্ঞা পাইয়া ঘাতক পুরুষ চিত্রকরকে বধ্য ভূমিতে লইয়া চলিল। মন্ত্রী মনে মনে কহিলেন, এমত মূখ রাজা আমি কোথাও দেখি নাই। বিদ্বান, লোক অপরাধী হইলে তাহাকে নির্বাসন করা যায়, পূর্ব্বাপর এইপ্রকার প্রথা প্রথিত আছে, তাহাদের প্রাণদণ্ড করা যায়না। কিন্তু এই রাজার মুখ অমৃতময় এবং অন্তর বিষে পরিপূর্ণ, ইহার কথার সহিত কর্ম্মের ঐক্য নাই। মন্ত্রী মনে মনে এই প্রকার অনেক চিন্তা করিতে লাগিলেন, কিন্তু ভয় প্রযুক্ত রাজাকে কোন কথা বলিতে পারিলেন না। পরে ঘাতক পুরুষের পশ্চাৎ পশ্চাৎ গিয়া তাহাকে কহিলেন তুমি এই নিরপরাধী ব্যক্তিকে বধ করিও না, ইহাকে পরিত্যাগ কর, এবং মৃগ বধ করিয়া তাহার চক্ষু ঃ রাজাকে দেখাও। ঘাতক পুরুষ মন্ত্রীর বাক্যানুসারে একটা হরিণ বধ করিয়া তাহার চক্ষুঃ রাজার নিকটে লইয়াগিয়া বলিল মহারাজ চিত্রকরের নয়ন আনয়ন করিয়াছি। রাজা আজ্ঞা করিলেন ফেলিয়া দাও। চিত্রকর মন্ত্রীর বাটীতে অতি গোপনে থাকিল।

 কিয়দিদবস পরে ঐ রাজার পুত্র মৃগয়ার্থে গমন করিয়া এক ঘোর অরণ্যে প্রবিষ্ট হইলেন, এবং তথায় একটা ভীষণমূর্ত্তি বৃহৎ ব্যাঘ্র দেখিয়া মহাভীত হইয়া তুরঙ্গ পরিত্যাগ পূর্বক এক বৃক্ষে আরোহণ করিলেন।