পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
বত্রিশ সিংহাসন।

অতএব এই ব্যক্তিকে রক্ষা করিয়া কেন বিষবৃক্ষ রোপণ করিতেছ। ইহাকে বৃক্ষ হইতে নীচে ফেলিয়া দাও, আমি ভক্ষণ করি, তুমিও আসিয়া ইহার কিয়দংশ মাংস ভোজন কর। আমার বাক্য অবহেলন করি ও না, মণি হস্ত হইতে পড়িলে কখন পুনর্ব্বার হস্তে উঠিয়া আইসে না। তুমি নিদ্রাগত হইলে ঐ ব্যক্তি নিশ্চয়। তোমাকে সংহার করিবে। অতএব আমি যাহা কহিলাম তাহা কর, নতুবা শত্রুবিনাশের এমত সময় আর পাইবেন, পরে মনস্তাপ করিতে হইবে।

 ভাল্লুক কহিল অরে অজ্ঞান ব্যাঘ্র বিশ্বাসঘাতকতা অতি অকর্ত্তব্য কর্ম্ম, যে ব্যক্তি আমাদের শরণ লায় তাহাকে নষ্ট করা কোন প্রকারে উচিত নহে। নৃপতিবধ, বৃক্ষচ্ছেদন, গুরু সমীপে মিথ্যা কথন ও কানন দাহন মহাপাপ বটে, কিন্তু সকল অপেক্ষা বিশ্বাসঘাতকতা গুরুতর পাপ, ইহার প্রায়শ্চিত্ত নাই। এই ব্যক্তি আমার শরণ লইয়াছে, অতএব ইহাকে ভক্ষণ করিলাম, তাহাতে কি ক্ষতি। ব্যাঘ্র কুপিত হইয়া বলিল তবে তুমি থাক, আমি তোমাকেও জীবদ্দশায় যাইতে দিবনা। এই প্রকার কথোপকথনে প্রায় রাত্রি দুই প্রহর হইল। তৎপরে রাজনন্দন নিদ্রা হইতে উঠিয়া বসিলেন। ভাল্লুক শয়ন করিল।

 ঋক্ষ নিদ্রিত হইলে ব্যাঘ্র রাজপুত্রকে কহিল হে রাজকুমার তুমি অবশ্যই জান, নদী নখী শৃঙ্গী নারী ও অস্ত্রধারী এবং রাজপুরুষকে কখন বিশ্বাস করা কর্তব্য