পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৬
বত্রিশ সিংহাসন

অনন্তর ব্রাহ্মণ জিজ্ঞাসিলেন, যে ব্যক্তি কাষ্ঠ বিক্রয় করিয়া উদর পালন করে তাহার রাজলক্ষণ থাকিয়াও কেন তাহার দৈন্যদশা দূর হয় নাই। রাজা বলিলেন তাহার আর কোন দোষের চিঃ থাকিবে, তাহাতেই তাহার সৌভাগ্য নাশ করিয়াছে। পরে, এই কথা প্রমাণের জন্য তাহাকে অন্বেষণ করিয়া আনিয়া দেখিলেন তাহার পদে কাকপদ চিহ্ও আছে। ঐ চিয়ে কখন সৌভাগ্যকে নিকটবর্তী হইতে দেয় না, তাহাতে তাহার রাজলক্ষণ বিফল হইয়াছে। ইহাতে ব্রাহ্মণ অতিশয় আহ্লাদিত হইলেন, এবং বুঝিলেন সামুদ্রিক শাস্ত্র মিথ্যা নহে। পরে রাজাকে আশীর্ব্বাদ করিয়া গৃহে প্রস্থান করিলেন।

 এই বিবরণ সমাপন করিয়া পুত্তলিকা কহিল, হে ভোজরাজ, তুমি এমত কি জ্ঞানাভ্যাস করিয়াছ যে। এই সিংহাসননাপবেশন করিবে। দেখ, রাজা বিক্রমদিত্য কেমন পণ্ডিত ছিলেন এবং ব্রাহ্মণের সন্দেহ ভঞ্জনার্থ আপন শরীর কাটিয়া দেখাইলেন। তোমার এমন গুণ কোথায়, যদি তুমি আপন শরীর কার্টিতে তবে সিংহাসনোপবেশনের যোগ্য হইতে পারিবে। হে ভোজরাজ তুমি আপন মনে চিন্তা করিয়া দেখ, মৃত্যু হইলেও মনুষ্যের নাম ধর্ম্ম ও যশঃ যায়না। সুগন্ধযুক্ত পুষ্প যদিও শুষ্ক হয় তথাপি তাহার সুগন্ধ 'দূর হয় না। অতএব যশঃ উপার্জনই মানব-জন্মের সার কর্ম।