পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একবিংশ পুত্তলিকা।
১৪১

এক গন্ধর্ব্বকন্যা তাঁহার সভার নর্ত্তকী ছিল। মাধব রাজদ্বারে উপস্থিত হইয়া দ্বারপালকে কহিলেন রাজাকে সংবাদ দেও, আমি তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিব। দ্বারী তাঁহার বাক্য শুনিয়াও অঞতবৎ তুচ্ছ করিল। মাধব পথশ্রান্তি শান্তি জন্য দ্বারদেশে বসিলেন। ঐ সময়ে রাজপুরীর মধ্যে সঙ্গীত হইতেছিল। মাধব তাহা শুনিয়া বারম্বার কহিতে লাগিলেন, রাজা যেমন অপণ্ডিত, সভাসদও সেই প্রকার গুণাগুণ-বিবেচনা শূন্য। দৌবারিক তাহা শুনিয়া কুপিত হইল, কিন্তু কোন উত্তর না করিয়া, রাজার সম্মুখে কৃতাঞ্জলি পুটে দণ্ডায়মান হইল। ভূপতি তাহার প্রতি দৃষ্টি করিলে, দ্বারী কহিল মহারাজ এক বিদেশী ব্রাহ্মণ আসিয়া দ্বারে বসিয়াছে, এবং অনবরত কহিতেছে রাজসভাস্থ সমস্ত লোক মূখ, কেহ গুণের বিচার করেন না। ভূপাল দ্বারপালকে বলিলেন তুমি গিয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা কর তিনি কিজন্য ইহাদিগকে সূখ বলিতেছেন।

 দ্বারী রাজাজ্ঞানুসারে দ্বারে আসিয়া ব্রাহ্মণকে জিজ্ঞাসা করিল তুমি মহারাজকে অজ্ঞান বলিতেছ ইহার কারণ কি। মাধব কহিলেন দ্বাদশ জন সঙ্গীতকারক তিন সারি হইয়া, চারি চারি জন এক এক শ্রেণীতে দণ্ডায়মান আছে। ইহার মধ্যে যে তিন জন মৃদঙ্গ বাজাইতেছে তন্মধ্যে পূর্বমুখী এক মৃদঙ্গীর এক অঙ্গুলি নাই, তাহাতে মানের ঘরে ভাল চাটি পড়িতেছেনা। এই জন্য আমি সকলকে মূঢ় বিবেচনা করিয়াছি।