পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একবিংশ পুত্তলিকা।
১৪৯

এই। রাজা মাধবকে জিজ্ঞাসা করিলেন তুমি কাহার বিচ্ছেদে এই বিষমশর দশা প্রাপ্ত হইয়াছ। মাধব দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগপূর্ব্বক কহিলেন, মহারাজ, কামকদলার বিচ্ছেদে আমার এই দুর্গতি হইয়াছে। কামকন্দলা রাজা কামসেনের সভার নর্তকী। তুমি ধর্ম্মাত্মা, আমি তোমার শরণ লইয়াছি। তুমি যদি সেই প্রাণানন্দদায়িনীকে দিয়া আমার প্রাণরক্ষা কর তবে প্রাণ দান পাই। রাজা হাস্য করিয়া কহিলেন হে বিপ্র সে বারাঙ্গনা, তাহার প্রেমে তুমি আপন ধর্ম্ম কর্ম্ম সকল বিসর্জন দাও, ইহা অনুচিত। মাধব কহিলেন, মহারাজ, প্রেমের তন্ত্র স্বতন্ত্র, যে ব্যক্তি প্রেম মন্ত্র পাঠ করে সে আপন শরীর আত্ম। ও ধর্ম কর্ম সকল তাহাতে সমর্পণ করে, তাহার বৃত্তান্ত কি নিবেদন করিব।

 রাজা এই কথা শুনিয়া তাহাকে স্ববাসে রাখিলেন, এবং স্বীয় সভার নকীগণকে বলিলেন তোমরা অতি মনোহর বেশ ভূষ করিয়া আইস। নর্তকীগণ নানা অলঙ্কারে ভূষিত হইয়া নিরুপম মোহিনীসজ্জা করিয়া রাজার সভায় আসিলে, রাজা মাধবকে বলিলেন ইহার মধ্যে তোমার যাহাকে অভিলাষ হয় গ্রহণ কর। ব্রাহ্মণনন্দন কহিলেন মহারাজ এই সকল নারী পরম সুন্দরী বটে, কিন্তু কামকলা ভিন্ন অন্য কামিনী আমার কামনীয় নহে। বারিদ-বিনিগর্ত-বারিবিন্দুপ্রত্যাশী চাতকের পিপাসা ঐ বারি ব্যতীত আর কিছু তেই নিবারণ হইতে পারে না।