পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮২
বত্রিশ সিংহাসন

করুন। রাজা এই কথা শুনিয়া মনে মনে ভাবিলেন, দাসী যাহা বলিল তাহা যথার্থ, কেননা আমার পর- মায়ুঃ দিন দিন ক্ষয় হইতেছে, এ পর্যন্ত ধর্ম্ম কর্ম্ম ও দেবার্চনা করিতে পারি নাই। এক্ষণে রাজকার্যের মায়া পরিত্যাগ করিয়া যােগ সাধন করি, তাহা হইলে পরমার্থের কর্ম্ম হইবে। মনুষ্যের জীবন প্রভাতের শিশিরের ন্যায়, এই জীবনের ভরসায়। আমি প্রকৃত কর্ম্ম ভুলিয়া আছি।

 এই সকল বিবেচনা পূর্ব্বক রাজা রাজ্যপাঠ ধনজন মিথ্যা জ্ঞান করিয়া, তপস্যা জন্য এক অরণ্যে প্রবেশ করিলেন। কিয়দূরে গিয়া দেখিলেন এক স্থানে কতিপয় তপস্বী মণ্ডলাকারে বসিয়া ধ্যানে মগ্ন আছেন, তাহার মধ্যে কেহ উৰ্দ্ধবাহু, কেহ অধঃশিরা, কেহৰ। পঞ্চাগ্নি জ্বলিয়া তপস্যা করিতেছেন। কেহবা আপ- নার শরীরের মাংস কাটিয়া অগ্নিতে আহুতি দিতেছেন। রাজা তাহাদের এই প্রকার তপস্যা দেখিয়া আপনিও তথায় যােগে বসিলেন। কয়েক দিবস অতীত হইলে, তপস্বীগণ অগ্নিতে আপন আপন দেহ আহুতি দিলেন। রাজাও তাহা দেখিয়া স্বীয় শরীর কাটিয়া অগ্নিতে দিতে লাগিলেন, পরিশেষে আপন শিরচ্ছেদন করিয়া অগ্নিতে সমর্পণ করিলেন।

 তপস্বীগণ এই প্রকার বিলয় প্রাপ্ত হইলে পর, তত্রস্থ শিবালয় হইতে এক দুত নির্গত হইয়া একে একে সকল তপস্বীর ভস্ম লইয়া স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র রাশি করিল,